সময় জার্নাল ডেস্ক:
এ বছরের জুনে অনুষ্ঠিত কেমব্রিজ পরীক্ষা সিরিজে অসাধারণ অ্যাকাডেমিক নৈপুণ্যের জন্য কেমব্রিজ অ্যাসেসমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের (কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল) ‘টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশের ৯ জন শিক্ষার্থী। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অসাধারণ কৃতিত্বের ফল হিসেবে ৯০টি কেমব্রিজ লার্নার্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল।
কেমব্রিজ পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্যের জন্য বাংলাদেশের ৭১ জন শিক্ষার্থী সম্মানসূচক ক্যামব্রিজ লার্নার্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। চারটি ক্যাটাগরিতে এই অ্যাওয়ার্ডগুলো দেয়া হয়; যথা: টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড, টপ ইন কান্ট্রি, হাই অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ও বেস্ট অ্যাক্রোস। এর মধ্যে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করতে সক্ষম হওয়ায় বাংলাদেশের ৯ শিক্ষার্থী টপ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড পুরস্কার অর্জন করে। বিজয়ী ৯ জনের মধ্যে ৭ জনই গণিতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য এ স্বীকৃতি লাভ করে। কেমব্রিজ আইজিসিএসই, কেমব্রিজ ‘ও’ লেভেল, কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এএস ও ‘এ’ লেভেল কোয়ালিফিকেশনের আলাদা আলাদা বিষয়ে এ পুরস্কার অর্জন করে শিক্ষার্থীরা।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- ব্রিটিশ কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ডেভিড নক্স, কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং ডিরেক্টর লি ডেভিস, ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সাম অপারেশনসের ডিরেক্টর জুনায়েদ আহমেদ এবং কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ম্যানেজার শাহীন রেজা।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, “কেমব্রিজ পরীক্ষায় তোমাদের অর্জন কঠোর পরিশ্রম এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে তোমরা যে প্রতিযোগিতা করতে পারো, তারই প্রমাণ। আমার বিশ্বাস, কেমব্রিজ পরীক্ষায় এ অর্জনের মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পর্যায়ে অবদান রাখতে পারবে। তবে, একটি বিষয় আমি তোমাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে ৩০ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই, মাতৃভূমির প্রতি তোমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেটা অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না।”
বাংলাদেশ নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, “শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিকভাবে সেরার স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশেও মেধাবী শিক্ষার্থীরা রয়েছে এবং তাদের সফলতা অর্জনের প্রচেষ্টা রয়েছে। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সামগ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অর্থনীতি-বাণিজ্য সহ সকল ক্ষেত্রে এবং ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাজ্যে ৬ লাখের বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন, যারা সমাজের উন্নতিতে অবদান রেখে চলেছেন। আমি মনে করি, এক্ষেত্রে শিক্ষা সবকিছুর মূলে রয়েছে। এরপর, তোমরা যখন তোমাদের জীবন গড়া ও শিক্ষা অর্জনের পরবর্তী পদক্ষপ নিয়ে ভাববে, আমার প্রত্যাশা তোমরা এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে বিবেচনা করবে। কেননা, হাই কমিশনার হিসেবে হিসেবে আমি সবচেয়ে আনন্দিত কারণ এ সময়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।”
এ নিয়ে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের টিচিং অ্যান্ড লার্নিং ডিরেক্টর লি ডেভিস বলেন, “শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী, দায়িত্বশীল, উদ্ভাবনী ও চিন্তাশীল করে গড়ে তুলে মেধার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে স্কুলগুলোকে সহায়তা দিয়ে থাকে কেমব্রিজ এডুকেশন। এছাড়াও, শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও সাফল্য অর্জনে সহায়তা করায় আমরা সকল শিক্ষক ও অভিভাবককে ধন্যবাদ দিতে চাই।”
কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল গত ১৬০ বছর ধরে আন্তর্জাতিকভাবে এ পরীক্ষার আয়োজন করে আসছে। যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল ও ব্রিটিশ কাউন্সিল, বাংলাদেশ।
সময় জার্নাল/এলআর