শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

'ওরে ধর, যেতে দিবি না ও একটা বেয়াদব': কুবি ছাত্রলীগ নেত্রী

রোববার, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
'ওরে ধর, যেতে দিবি না ও একটা বেয়াদব': কুবি ছাত্রলীগ নেত্রী

কুবি প্রতিনিধ:

' ওরে ধর, 'যেতে দিবি না ও একটা বেয়াদব' বলে রুমের দরজা আটকিয়ে সেমিস্টার পরীক্ষার আগের রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীকে হল শাখা ছাত্রলীগের পাঁচ জন ও একজন অজ্ঞাতনামা মেয়ে হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ দিয়েছে একই হলের  একজন আবাসিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) হলটির প্রাধ্যক্ষ বরাবর এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের  শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহুরা মীম।


তিন পাতার অভিযোগপত্রে হেনস্তার শিকার হওয়ার দাবি করা নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জোহুরা মীম মোট ছয়জনকে অভিযুক্ত করেছে। তারা হলেন-  শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি (৪) ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মৃদুলা সরকার রূপা,  শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি (২) ও অর্থনীতি বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সামিয়া তাসনীম স্বর্ণা, পরিসংখ্যান বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ও  ছাত্রলীগ কর্মী খাদিজা আক্তার, একই বিভাগের  শান্তা ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী  ফারহানা চৌধুরী এবং অজ্ঞাতনামা একজন।


অভিযোগপত্রে বলা হয়, বুধবার (৭ই ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টায় অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে (ফাতেমা তুজ জোহুরা মীম) হলেরই অন্য এক শিক্ষার্থী রুমে এসে জানায় ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা ১৩-১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের হলের টিভি রুমে ডেকে পাঠিয়েছে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর বৃহস্পতিবার (৮ই ডিসেম্বর)  সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় সে যথাসময়ে টিভি রুমে উপস্থিত না হলে সেদিন রাত ১২ টায় তার রুমে (৩০৯)  ১২তম আবর্তনের চারজন শিক্ষার্থী যান এবং কেন সেই শিক্ষার্থী ডাকানোর পরও যায়নি তা নিয়ে জবাবদিহি করলে অভিযোগকারী  তার পরীক্ষা বিধায় তিনি উপস্থিত হননি বলে জানান। এবং তার রুমের সিনিয়রকেও ( মৃদুলা সরকার রূপা) বিষয়টি আগে জানিয়েছেন বললে তারা রুমমেট সিনিয়রকেও রুমে আনেন এবং তিনি সহ বাকি চারজন উচ্চবাচ্য ও পরিবার তুলে বাজে মন্তব্য শুরু করেন।


ঝামেলা এড়িয়ে যেতে অভিযোগকারী রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পরিসংখ্যান বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার ভুক্তভোগীকে হাত ধরে হ্যাচকা টান মেরে দরজা বন্ধ করে দেন। ততক্ষণাৎ পাশ থেকে অর্থনীতি বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সামিয়া তাসনীম স্বর্ণা বলেন, ' ওরে ধর, যেতে দিবি না। ও একটা বেয়াদব।' এরপর উপস্থিত পরিসংখ্যান বিভাগের ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী  শান্তা ইসলাম বলেন 'ওর সাথে ফাইজা ( হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি)  আর সিসিলি ( শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) আপুই কথা বলবে। এমন মন্তব্যের পর সামিয়া তাসনীম বলেন, " আমাকে ফাইজা আপু বলেছে কথা বলতে ওর সাথে, আমিই বলব।' 


অভিযোগপত্রে  আরো উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার পূর্বেও সামিয়া তাসনীম স্বর্ণা অভিযোগকারীকে রুমে ডাকিয়ে হেনস্তা করেন। রাতে ঘটনার এক পর্যায়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ১২ তম আবর্তনের ফারহানা চৌধুরী বলেন, 'এমন জুনিয়রকে চড়ানো, উষ্ঠানো উচিত। 'অভিযোগপত্রে উল্লিখিতদের ফোন দেয়া হলে ফারহানা আক্তার, মৃদুলা আক্তার ও সামিয়া তাসনিম ফোন ধরেন এবং প্রতিবেদককে তারা জানান ভুল বুঝাবুঝির কারনে সমস্যা হয়েছিল কিন্তু প্রভোস্টের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। এছাড়া বাকিরা ফোন ধরেননি।


অভিযোগকারী নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ফাতেমা তুজ জহুরা মীম বলেন,' অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পর হল প্রাধ্যক্ষ এসেছিলেন হলে এবং আমাদের দু পক্ষকে নিয়েই বসে সমাধানের চেষ্টা করেছেন'।অভিযোগ উঠাবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি আমার অভিযোগপত্র হল প্রভোস্ট এবং বিভাগীয় প্রধানের কাছে জমা দিয়েছি। রবিবার অথবা সোমবার আমি বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা বলবো। তবে অভিযোগপত্র উঠানোর কোন চিন্তা নেই।


এর আগেও শেখ হাসিনা হল শাখা ছাত্রলীগের নতুন গঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। অনেক শিক্ষার্থী তাদের ভয়ে হল ত্যাগ করেছেন এবং অনেককে হলেই উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থীকে প্রেশার দিয়ে বরাদ্দকৃত রুমে উঠতে না দিয়ে অন্য রুমে উঠতে চাপ প্রয়োগ করেছে। গত ৭ ডিসেম্বরের ঘটনায় অভিযোগ করা শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। হল প্রশাসন কর্তৃক ২১৮ নাম্বার রুম বরাদ্দ থাকলেও তাকে ৩০৯ নাম্বার রুমে উঠতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে তার জন্য বরাদ্ধকৃত ২১৮ নাম্বার রুমে থাকছেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মেহেজাবীন, তৌফিকা ইসলাম  এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মেঘলা। 


এই বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ' বিষয়টা ঘটনা সমাধানের সময় সামনে এসেছে। সামনে যদি কেউ রুম পরিবর্তন করে বা করতে চায় তাহলে লিখিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে।এই ব্যাপারে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী ফাইজা মেহেজাবীন বলেন, ওইদিন রাতে আমি হলে উপস্থিত ছিলাম না। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি জানতে পেরেছি। যদি ছাত্রলীগের ভেতরের কেউ করে থাকে তাহলে আমরা সিনিয়রদের সাথে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিব। রুম থেকে বের করে দেয়া ও নানা সময় হেনস্তার ব্যাপারে বলেন, হলে ছাত্রলীগের কিছু কট্টর বিরোধী আছে তারা এগুলো ছড়াচ্ছে। এরকম কিছুই হয়নি।



এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল