মোঃ আমিনুল ইসলাম বুলবুল:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদের স্মৃতির জন্য নিবেদিত একটি স্থাপনা হলো জাতীয় স্মৃতিসৌধ। ঢাকার সাভারের নবীনগরে এটি অবস্থিত। জাতীয় স্মৃতিসৌধের অপর নাম "সম্মিলিত প্রয়াস"। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পরে ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে জাতীয় পর্যায়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও সেই প্রেক্ষিতে নকশা প্রনয়ণ করা হয়। ১৯৭৮ সালের জুন মাসে সৈয়দ মাইনুল হোসেনের প্রণীত নকশা গৃহীত হয়।
১৯৭৯ সালে মূল স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৯৮২ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ এটি উদ্বোধন করেন। জতীয় স্মৃতিসৌধের উচ্চতা ১৫০ ফুট বা ৪৫.৭২ মিটার। স্মৃতিসৌধটি সাতটি ত্রিভুজ আকৃতির স্তম্ভ নিয়ে গঠিত। । স্তম্ভগুলো ছোট থেকে বড় ক্রমানুসারে তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতাকর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্প অর্পণ করে থাকেন।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের সাতটি স্তম্ভ স্বাধীনতা আন্দোলনের সাতটি পর্যায়কে নির্দেশ করে। এই সাতটি পর্যায় হলো--১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা,১৯৬৯ সালের গণভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ।
লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি তিতুমীর কলেজ।