শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

মুক্তির যুদ্ধ!

বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২২, ২০২১
মুক্তির যুদ্ধ!

শুভ্র দে নয়ন : একটা সময় ছিলো যখন স্বাধীন থেকে ও ছিলাম আমরা পরাধীন, সতন্ত্র থেকে ও ছিলাম রূদ্ধ, ছিলো না সার্বভৌমত্ব। নিরাপত্তা ছিলো না আমার পূর্বজ দের।

তারা ভাবলেন অনুজদের কথা, অনুজদের জন্য একটা মুক্ত স্বাধীন দেশ গড়ে দিয়ে যাওয়ার কথা। যেখানে থাকবে না কোন বৈষম্য, যেখানে অনুজে'রা হবে না নিগৃহীত, অনুজা'রা হবে না লাঞ্ছিত কিংবা ধর্ষিত। 

আমাদের কথা ভেবে-ই কিনা সেই দিন রক্ত দিয়ে পৃথিবীর বুকে তারা একে দিলেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মানচিত্র। 

মানচিত্র পেলাম,পেলাম সার্বভৌমত্ব কিন্তু বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীনতা'টা যেন অধরাই রয়ে গেলো। বৈষম্য-সাম্য-অসাম্প্রদায়িকতা বড়-ই অদ্ভুত তিনটি শব্দ, তাদের অর্থ উদঘাটিত করা আমার কাম্য নয়।এ যাত্রায় তাদের না হয় বাদ-ই দিলাম।

আমার অগ্রজেদের ভ্রম ভাঙতে কয়েকদিন সময় লাগলো।এই খুব বেশি না ১৯৭৩, হঠাৎই দুর্ভিক্ষ এসে বুঝিয়ে দিয়ে গেলো শুধু স্বাধীনতায় পেট ভরে না।ঘরে চাউল না থাকলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আর স্বাতন্ত্র্যতা তিনটি শব্দই যেন বড় অর্থহীন!

শুরু হলো নতুন যুদ্ধ, নতুন করে বাঁচার লড়াই, সন্তানের মুখে ভাত তুলে দেওয়ার জন্য যুদ্ধ,ভালো ভাবে বাঁচার জন্য যুদ্ধ।

তারপর প্রায় ১৫ বছর চলে গেলো নিরবে নিভৃতে। কিন্তু আমরা যুদ্ধবাজ জাতি, সেই ১৩০০ সাল থেকে বহিঃশত্রু'র বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে টিকে আছি আজ অবধি। নূর হোসেন নামের এক কল্পনাপ্রিয় যোদ্ধা তাই আবার ও দাড়িয়ে গেলো আমাদের মুক্ত করতে, কিন্তু সে কি জানে যুদ্ধ তখনও অনেক বাকি।

নব্বইয়ের দশক থেকে আজ অবধি, গত ৩০ বছরের প্রত্যেকটা দিন বাঙালি যুদ্ধ করে-ই চলেছে আর বাঙালির এই মুক্তির মিছিলে আমি একাত্ম হয়েছি নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে এসে। অর্জন নেহাৎ-ই আমাদের মন্দ নয়, ক্ষুধাকে জয় করেছি,দারিদ্র্য-কে জয় করেছি, জয় করেছি দূর্যোগ আর দুর্বলতা-কে ও।

সারা বিশ্বের উদীয়মান সন্ত্রাসীদের ও দিয়েছি পরাজয়ের গ্লানি। যে-ই শান্তির বার্তা নিয়ে আমাদের জন্ম, আজ সেই বার্তা পৌঁছে দিয়েছি পৃথিবীর প্রত্যেকটি কোনে, প্রত্যেকটি ঘরে, প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে। কিন্তু সকলে গ্রহণ করতে পেরেছে কি আমাদের সেই শান্তির বার্তা? 

শিল্প-সাহিত্য-প্রযুক্তি কিংবা বানিজ্য কিছুই আমাদের অধরা নয়, কেবল অধরা রয়ে গেলো শিক্ষা, চিকিৎসা আর বিজ্ঞান। 

এখনো আমার মুক্তি পাই নি কুসংস্কার আর অসদাচার থেকে। মুক্তি মেলেনি দূর্নীতি কিংবা মাদক থেকেও। আমাদের আরও একটা বড়ো প্রতিবন্ধকতা আমাদের স্থুলবুদ্ধি আর অতিকথন। 

আমরা এখনো আমাদের মানসিকতাকে আমাদের রাস্তা গুলোর মতোই সরু আর নোংরা করে রেখেছি।আমার মা-বোনেদের আজো মুক্তি মিলেনি পশুদের পাশবিক নির্যাতন আর নোংরা আত্ম-দর্শনের হাত থেকে।

মুক্তি! সে-তো এখনো অনেক দূর।আর অনুজের কথা ভেবে, তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আমাদের ও যুদ্ধ করে যেতে হবে অগ্রজের প্রেরনা নিয়ে মুক্তির অন্ত পর্যন্ত।

তাই যে-ই যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ১৯৭১ এ সেই যুদ্ধটা বাস্তবে শেষ হয় নি আজ অব্দি।আমাদের এখনো লড়াই করে যেতে হবে আরও অনেক কাল, বহুকাল। আর এই মুক্তির যুদ্ধে আমরা সকলে-ই যোদ্ধা।

মুক্তির যুদ্ধ শেষ হয় কি কখনো? 

লেখক : স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষ, রসায়ন বিভাগ সরকারি তিতুমীর কলেজ, ঢাকা


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল