সময় জার্নাল প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন সৃষ্টি করে সমন্বয় এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে ভালোবাসতেন।
দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করতে হলে সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার বিকল্প নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আজ বিকেলে রাজধানীর মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবন থেকে সাবেক আইন মন্ত্রী এবং সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, এমপি'র স্মরণে ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আব্দুল মতিন খসরুকে অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী এবং উদার এবং সর্বগুণের অধিকারী হিসেবে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, তাঁর হঠাৎ করে চলে যাওয়া সকলের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। দেশ এবং জাতিকে দেবার মত তাঁর অনেক কিছুই ছিল। তিনি কুমিল্লার পাশাপাশি সারা দেশের উন্নয়নে যে স্বপ্ন দেখতেন তাঁর সেই স্বপ্ন এবং অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
আব্দুল মতিন খসরুকে নিজের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, অনেকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ মহান জাতীয় সংসদে বাতিলে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সকল ষড়যন্ত্র চূর্ণ করে উচ্চ আদালতে ইন্ডেমনিটি বাতিল চ্যালেঞ্জ করে করা রিট মোকাবেলা করেছিলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, আব্দুল মতিন খসরুর সাহসী ভূমিকার জন্য জাতির পিতার হত্যার বিচার দেখতে পেয়েছিলাম আমরা। এছাড়া, দলের দুঃসময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান করে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাবার সাহস ও উৎসাহ যোগাতেন বলেও জানান।
সাবেক এই আইন মন্ত্রীর সাথে নিজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লা জেলা মন্ত্রী থাকা অবস্থায় আব্দুল মতিন খসরু সকল নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে প্রায়ই মিটিং করতেন। মিটিংয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমাকে টেলিফোন করে আসতে বলতেন।
এসব সভায় অত্যন্ত বিশ্লেষণধর্মী যুক্তির মাধ্যমে তাঁর মতামত প্রকাশ করতেন এবং নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টির মাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌঁছানো সম্ভব।
এসময়, ১৯৯৮ সালের বন্যায় বন্যার্তদের মাঝে একসাথে ত্রাণকার্যক্রম পরিচালনা করার কথাও স্মরণ করেন মো. তাজুল ইসলাম।
আব্দুল মতিন খসরুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরস্পরের মধ্যে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ায় অবদান রাখতে সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।
স্মরণসভায় মন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুর আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
স্মরণ সভার প্রধান আলোচক এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, তিনি সফল সংসদ সদস্য ছিলেন। দেশে বিচার না হওয়ার অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে ভূমিকা রেখেছিলেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিত করণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হর্ত্যা বিচারের পথ সুগম হয়েছিল তার হাত ধরেই।
সংগঠনের প্রতি আনুগত্য ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থা খসরুর মধ্যে ছিল বলেই তিনি বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া থেকে ৫ বার জনগণের মেন্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ আইকন ও আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তাহেরের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সোনার বাংলা কলেজের সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, ডা. আতাউর রহমান জসিম ও মরহুম আব্দুল মতিন খসরুর সহোদর কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মমিন ফেরদৌস অংশ নেন।
সময় জার্নাল/এমআই