মুরাদ ইমাম কবির, হিলি প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের হাকিমপুরে হার্টে তিনটি ছিদ্র নিয়ে দূর্বিসহ জিবন কাটাচ্ছে তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া পারভিন। টাকার অভাবে সাদিয়ার চিকিৎসা করাতে পারছেন না তার দিন মুজুর বাবা। দিন যতই যাচ্ছে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে সাদিয়া। চিকিৎসকরা বলেছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সাদিয়ার হার্টে অপারেশন করাতে হবে। এই জন্য প্রয়োজন চার লক্ষ টাকা। দিনমুজুর বাবা’র পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সমম্ভব না হওয়ায় মেয়ের চিকিৎসায় বিত্যবানদের কাছে সাহায্য প্রত্যাশী সাদিয়ার পরিবার।
হিলি বাজার থেকে দেড় কিঃমিটার দক্ষিণে চুরিপট্টি এলাকায় সাদিয়ার বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দায় একটি কাঠের চৌকিতে বসে আন মনে তাকিয়ে আছে ১১ বছর বয়সি সাদিয়া। প্রতিবেশী অন্যান্য শিশুরা এদিক সেদিক ছুটাছুটি করলেও সাদিয়া চৌকিতে সবে নিঃশ্চুপ তাদের খেলা দেখছে। কথা হয় সাদিয়ার সাথে, সে জানায়, অন্যসব শিশুদের মতো তারও খেলাধুলা-ছুটোছুটি করতে মন চায় কিন্ত শাররিক অসুস্থ্যতায় তার পক্ষে এসব করা সম্ভব হয় না। অল্প হাঁটতেই হাঁপিয়ে ওঠে সে।
সাদিয়ার বাবা সানাউল পেশায় একজন হোটেল শ্রমিক। তিনশ টাকা দিন হাজিরা একটি খাবার হোটেলে শ্রমিকের কাজ করে। মা সালমা খাতুন অন্যের দোকান থেকে ছেঁড়া বস্তা এনে তা সেলাই করে। দু’জনের যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের চার জনের কষ্ঠের সংসার। সাদিয়ার বড় বোন সিনথিয়া ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। মেয়ের চিকিৎসায় সর্বশান্ত পরিবারটি থাকেন জরাজির্ণ মাটির একটি ভারা বাসায়।
সাদিয়ার মা সালমা খাতুন জানায়, তিন বছর বয়সে সাদিয়ার হার্টে ছিদ্র ধরা পরে। এর পর থেকে দিনাজপুর হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন স্থানে মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন। বর্তমানে সাদিয়ার হার্টের ছিদ্র গুলো দিন-দিন বড় হচ্ছে। সবশেষ ঢাকার চিকিৎসক বলেছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সাদিয়ার হার্টে অপারেশন করাতে হবে। এজন্য প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা। তাদের পক্ষে এই টাকা ব্যায় করা কখনোই সম্ভব না।
সাদিয়ার বাবা সামিউল বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে তিনি মেয়ের চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি ঋণে জর্জরিত। দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে ঋণের বোঝা। সরকারী ভাবে ৫০ হাজার টাকার অনুদান পেলেও পরীক্ষা নিরীক্ষা আর ডাক্তার দেখাতেই তা শেষ। মেয়ের চিকিৎসায় তিনি দেশের বিত্যবানদের কাছে সাহায্য কামনা করেছেন।
প্রতিবেশী মোফাজ্জল হোসেন, রাব্বে, সিরাজুল জানান, সাদিয়ার বাব-মা’র যে আয় তা দিয়ে কখনোই মেয়ের চিকিৎসা করা সম্ভব না। সাদিয়ার চিকিৎসায় তারাও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাদিয়ার স্কুল দক্ষিন বাসুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, আনোয়ারুল হক বলেন, অন্যের সহযোগীতা পেলে চঞ্চলা মেয়েটি আবারও ছুটোছুটি করবে আবারও স্কুলে লেখা পড়া শুরু করবে। সাদিয়াকে বাঁচিয়ে তুলতে সমাজের বিত্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সকলের সহযোগীতায় পারে ছোট্ট শিশু সাদিয়াকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে। সাদিয়াকে সাহায্য পাঠাতে তার বাবা’র (বিকাশ) নং- ০১৯৬৮৩১৬৩৪৬।
সময় জার্নাল/এলআর