এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গত ৩দিনের শৈত্যপ্রবাহে জেকে বসেছে কনকনে শীত। সুর্যের দেখা মেলেনি দু’দিনেও। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার পরে সুর্যের আলো কোন মতে দেখা গেলেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা উপজেরার জনজীবন। শ্রমজীবী মানুষেরা হয়ে পড়ছে কর্মহীন। শীতের প্রকোপে মানুষের জবুথবু অবস্থা। অতিরিক্ত ঠান্ডার কারনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়া ডায়রিয়া, টাইফয়েট ও শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বেড়েই চলছে।
হাসপাতাল সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন অর্ধশতাধিক শিশু ও বৃদ্ধরা। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৩০ জন। আবার অনেকেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীরা হলেন, উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের তাসনিমা (৭ মাস), জামিরতলা গ্রামের আরিফ (২৩ মাস), কালিকাবাড়ী গ্রামের আরবিন খান (২ মাস), ধানসাগর গ্রামের তাওহিদ (৪ মাস), ভাইজোড়া গ্রামের তাওহিদ শেখ (২২ মাস)। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বড়পরী গ্রামের তাবিয়া (এক বছর), তাবাচ্ছুম (এক বছর), বাদুরতলা গ্রামের হুজাইফা (১৩ মাস), চৌদ্দঘর গ্রামের আইয়ান (৭ মাস), ছোলমবাড়িয়া গ্রামের টাইফয়েট (জ্বরে আক্রান্ত) আব্দুল্লাহ সাফয়ান (৭ মাস), ভাইজোড়া গ্রামের মোর্শেদা বেগম (৩৫)। এ ছাড়াও শ্বাসকষ্ট এ্যাজমা রোগে আক্রান্ত বৃদ্ধা বদনীভাঙ্গা গ্রামের সোনাবান বিবি (৮০), পিসি বারইখালী গ্রামের জামাল গাজী (৬৫) এরা প্রত্যেকেই গত ৩ দিন ধরে হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রত্যন্ত অ লের গ্রামগুলোতে কোথাও কোথাও পরিস্থিতি এমন যে, ভোর ও সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির রূপ নিয়েছে। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। দিনে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়েও দূরের জিনিস দেখা যাচ্ছে না। ঘনকুয়াসার করনে পানগুছি নদীতে ফেরী চলাচলে ঘন্টার পর ঘন্টা বন্ধ থাকছে। ফেরীঘাটে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় থাকছে পরিবহনগুলো। কখন কুয়াসা কমবে, ফেরী চলাচল শুরু হবে। মাঠে আমন ধান কাটতে পারছেনা কৃষক।
এরকম আরো ২/৪দিন ঘন কুয়াশা থাকলে ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে শীতকালিন আলু ফসলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আকাশ বৈরাগী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, শৈত্যপ্রবাহের কারনে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে ৮/১০ জন রোগী গড়ে ভর্তি হচ্ছে প্রতিদিন। এর মধ্যে বেশীরভাগ শিশু-বৃদ্ধরা নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সার্বক্ষনিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরছেন।
এমআই