শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
সরিষা, ভুট্টা আবাদের পাশাপাশি বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ১২ ইউনিয়নের কৃষকেরা। শীতের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে সকালে উঠেই কোদাল আর মই হাতে নিয়ে মাঠে নেমেছেন তাঁরা। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই জমি তৈরি ও চারা রোপণের কাজ চলছে। বোরো চাষে লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বেড়েছে উপজেলার ধান চাষিদের মধ্যে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি না হলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা তাঁদের।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে বোরো আবাদে ধুম পড়েছে। জমির আইল ছাঁটা, আগাছা বাছাই ও সেচের ড্রেন তৈরিতে করছেন কৃষকেরা। আবার কেউ কেউ জমি তৈরি করে সেচ দিয়ে ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন। ইতিমধ্যে যেসব জমি চারা রোপণের জন্য তৈরি হয়েছে, সেসব জমিতে দলবেঁধে চারা রোপণ করছেন কৃষকেরা। পাশাপাশি ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে চারা। সার প্রয়োগসহ কৃষকরা নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট আবাদ যোগ্য জমি রয়েছে ২৩ হাজার ৫’শ ৫৯ হেক্টর। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার ১২ ইউনিয়নে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৪’শ ৯০ হেক্টর। এ ছাড়াও এবার ৩’শ ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার বোরো চাষীদের উন্নতমানের ফসল উৎপাদনের প্রদর্শনী করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রণোদনা ও পুনঃর্বাসনের আওতায় উপজেলার মোট ৫ হাজার কৃষককে ধানের বীজ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের আমঝোল গ্রামের কৃষক আতোয়ার আলী বলেন, গতবার বোরো ও আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর দামও পেয়েছি সন্তোশজনক। জমি তৈরির কাজ শেষ। আজ-কালের মধ্যে শ্রমিক দিয়ে বোরো রোপণ কাজ শুরু করবো। তবে সেচ আর মজুরির দাম বেড়েছে। গতবারের তুলনায় এবার বোরো আবাদে খরচ মোটামুটি বেড়েছে। আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে এবারও ভালো ফলন হওয়ার আশা তাঁর।
নওদাবাস ইউনিয়নের কেকতীবাড়ি গ্রামের বোরো চাষী আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, এবার বোরো রোপণে আগের চেয়ে খরচ বেশি হচ্ছে, তারপরও ৪ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছি। জমি পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করেছি, এরপর মই দিয়ে রোপণ শুরু করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুমন মিয়া বলেন, হাতীবান্ধা মূলত কৃষি সমৃদ্ধ এলাকা। এবার প্রথম থেকেই আবহাওয়া অনূকূলে রয়েছে। তাই ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে। বেশ উৎসবমুখর পরিবেশে মাঠে বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। বোরো আবাদ নিয়ে এখন পর্যন্ত কৃষকদের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেয়া হচ্ছে।
এমআই