সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে পুনরায় আন্দোলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড় শিক্ষার্থীরা। পূর্বে তাদের পেশকৃত ৫দফা দাবির কোন সুষ্ঠু সমাধান না পাওয়ায় রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
এতে আটকা পড়ে ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ গামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বাসগুলো। ভোগান্তিতে পড়েন কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
গত ২৫ জানুয়ারি আন্তঃবিভাগ খেলা চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে শারীরিক শিক্ষা অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে প্রশাসন কর্তৃক তিনদিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। কিন্তু কোনো সুষ্ঠু সমাধান না পাওয়ায় আজ পুনরায় প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। তালা দেওয়ার প্রায় এক ঘন্টা দশ মিনিট পর প্রক্টরিয়াল বডি প্রশাসন কর্তৃক দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করে তালা খুলে দেন তারা। পরে দাবির বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডির সাথে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দল।
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাজেট নেই বলে আমাদের বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, টেবিলটেনিস ও ব্যাডমিন্টন দলকে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টগুলোতে অংশ নিতে দিচ্ছে না। আমাদের এই দলগুলো আনবিটেন চ্যাম্পিয়ন। দলগুলোকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। ট্রেজারারের কাছে গেলে উনি বলেন যে বাজেট নেই। অন্যদিকে তিন বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে না। সম্প্রতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথা থাকলেও নানা অজুহাতে তার ফাইল আটকে রাখা হয়েছে। অথচ আমাদের কাছ থেকে প্রতি বছর ১৬০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রতি বছর সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া ২৮ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা কোথায় যাচ্ছে। আমরা আমাদের এই ১৬০ টাকার হিসাব চাই। তাছাড়া এসব ইভেন্টগুলো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে। কোন খেলাধুলা হয় না, মাঠের মধ্যে গিয়ে কুকুর শুয়ে থাকে।’
তারা বলেন, ‘আমরা একটা স্থায়ী সমাধান চাই। বারবার এখানে এসে এভাবে বাস আটকাতে আমাদেরও ভালো লাগে না। আমাদের বাবার সমতুল্য শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় আঠারো হাজার শিক্ষার্থীকে আমরা এভাবে কষ্ট দিতে চাই না।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আমি তো জানি না প্রশাসনের সাথে আগে তাদের কি কথা হয়েছে, তাদের কি দাবি রয়েছে। তাই তাদেরকে নিয়ে বসলাম, তাদের দাবিগুলো শুনলাম। বিশেষ করে ক্রীড়া পরিচালকের কাছ থেকে শুনলাম। প্রশাসনের সাথে আলাপ করে তাদের সাথে বসে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আমার মেসেজ হচ্ছে, কথায় কথায় গেট আটকিয়ে তার বিনিময়ে সুবিধা গ্রহণ করা, বিশেষ করে কারো তুপের তাস হওয়া-এটা ভালো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় এভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে দাবি আদায় কোনভাবেই যায় না। দাবি আদায় হতে পারে একটি সুন্দর আলোচনার মাধ্যমে। এই ধরনের অসুস্থ চর্চা বাদ দিতে হবে।’
এমআই