খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, নীলফামারী: তদারকি কর্মকর্তার তদারকির অভাবে ডিলাররা যে যার মত করে ১০ টাকা কেজি খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ করছে। ডিলাররা এক রকম নিজের খেয়াল খুশিমত এ চাল বিতরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তদারকি কর্মকর্তাকে একদিনও দেখেননি ডিলার। ঘটনাটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চাল বিতরণের।
বুধবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ২ টায় সরেজমিনে মাগুড়া ইউনিয়নের ধনীপাড়া গ্রামের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার মফিজার রহমানের চাল বিতরণের পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়- পয়েন্ট বন্ধ। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত চাল বিতরণের জন্য পয়েন্ট খোলা রাখার নিয়ম থাকলেও গোডাউনে চালের বস্তা থাকা সত্বেও নিজের খোয়াল খুশিমত পয়েন্ট বন্ধ রেখেছেন।
তদারকি কর্মকর্তা ১০ টাকা কেজি’র চাল বিতরণে তদারকি না করায় ডিলাররা এ রকম নিজের খেয়াল খুশিমত চাল বিতরণ করছেন বলে অনেকে জানান। সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে এক রকম নিজের মতই চলছে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ। ফলে ১০ টাকার কেজি চালে অর্থ বেশি নিচ্ছে ডিলাররা এমন অভিযোগও উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া চাল বিতরণের কোন নিয়ম না মানায় উপকারভোগীরা এসে পয়েন্ট বন্ধ দেখে অনেকে ফেরত যাচ্ছেন। আবার অনেক উপকারভোগী হচ্ছেন হয়রানির শিকার।
ডিলার মফিজার রহমানের পয়েন্টে গেলে তার ছেলে লিখন সাংবাদিকদের জানান-তদারকি কর্মকর্তাকে একদিনও দেখেনি। এমনকি তিনি চাল বিতরণ পয়েন্টেও কোন দিন আসেননি। তাকে ফোন দিলেও তিনি এখন পর্যন্ত কোন দিন চাল বিতরণের তদারকি করতে এখানে আসেননি।
তিনি আরও জানান- তদারকি কর্মকর্তা না আসায় আমরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগমকে অবহিত করি এবং তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে চাল বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
মাগুড়া ইউনিয়নের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার আবু তাহেরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ২২ ও ২৩ তারিখ চাল বিতরণ করা হয়েছে। আজও বিতরণ হচ্ছে।
মাগুড়া ধনীপাড়া পয়েন্টে ক’দিন তদারকি করেছেন জানতে চাইলে তিনি কাগজ দেখে জানাবেন বলে জানান। মাগুড়া ধনীপাড়ার ডিলার তাকে কোন দিনও দেখেননি এবং তিনি কোন দিন তদারকি করেননি এমন অভিযোগ আছে জানতে চাইলে তিনি দ্রুত ফোনটি কেটে দেন।
পরবর্তীতে তার সাথে আরও ৩ বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগমের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অবগত আছেন বলে জানান। ডিলার অনুমতি সাপেক্ষে চাল বিতরণ শুরু করেছে।
তদারকি কর্মকর্তারা চাল বিতরণ পয়েন্টে যাচ্ছেন না ও তদারকি করছেন না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি সাংবাদিকদের জানান- একজন তদারকি কর্মকর্তা কয়েকটি পয়েন্টের তদারকি করেন তাই সব পয়েন্টে এক সাথে থাকা সম্ভব না। আরও বলেন তদারকি কর্মকর্তারা কেন তদারকি করছে না সে বিষয়টি আমি দেখছি।
উল্লেখ্য যে, ৩০ কেজি চাল ৩০০ টাকার স্থলে ৩২০ টাকা ও অনলাইন চার্জের জন্য ২০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তা পত্রিকায় প্রকাশও ইতোমধ্যে হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল কয়েকটি পত্রিকায় '১০ টাকা কেজির চালে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় সেই সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য খাদ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগম।
সময় জার্নাল/এমআই