নিজস্ব প্রতিনিধি:
দেশের ২২তম প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন দুদকের সাবেক কমিশনার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার নাম চূড়ান্ত করেন।
প্রেসিডেন্ট পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মনোনয়নপত্র আজ নির্বাচন কমিশনে দাখিল করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরে তিনি নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কাছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। তিনি এ মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন।
সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের মনোনীত প্রার্থীই হচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, এটি মোটামুটি নিশ্চিত। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই ১৩ ফেব্রুয়ারি। প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি। সংসদ ভবনে ভোট গ্রহণ হবে ১৯শে ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অবশ্য প্রেসিডেন্ট পদে একক প্রার্থী হলে ভোটের প্রয়োজন হবে না।
সে ক্ষেত্রে ১৪ই ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিনেই একক প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
সংবিধান অনুয়াযী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪শে এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩শে এপ্রিল শেষ হবে।
১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারা বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হন তিনি। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের পিতা এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড, রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন।
সময় জার্নাল/এলআর