মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সিসি ক্যামেরার সামনে টাকা দেয়ায় শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ টিআই এর বিরুদ্ধে

সোমবার, ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩
সিসি ক্যামেরার সামনে টাকা দেয়ায় শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ টিআই এর বিরুদ্ধে

আব্দুল কাইয়ুম,সাভার প্রতিনিধি:


আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল মহাসড়কের পাশে আশুলিয়ার একটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ভিতরে শ্রমিককে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অটোরিকশা থেকে সরকারি জরিমানার কথা বলে রশিদ ছাড়া টাকা আদায় করার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশ সুপার বরাবর এ সংক্রান্ত এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিক।


সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অভিযোগের ব্যাপারে জানান ভুক্তভোগী পোশাক শ্রমিক। এর আগে গত শনিবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের একাধিক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে বাইপাইলে অবস্থিত টি.আই জাহাঙ্গীর ক্রসিং পুলিশ বক্সে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। সেই পুলিশ বক্সের দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) খসরু পারভেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।


ভুক্তভোগী পোশাক শ্রমিকের নাম মো ছালেক মিয়া। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরে হলেও আশুলিয়ার বুড়ির বাজার এলাকায় ভাড়া থেকে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মারধরের শিকার ছালেক মিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমার এক পূর্ব পরিচিত শফিকুলের অটোরিকশা বাইপাইলে আটক করে জরিমানা বাবদ ২ হাজার টাকা আদায় করে ট্রাফিক পুলিশ। পরে শফিকুলের কাছে টাকা না থাকায় আমাকে খবর দেয়। পরে আমি ও আমার এক বন্ধু আব্দুল জলিলসহ পুলিশ বক্সে উপস্থিত হই। গিয়ে দেখি টিআই খসরু সাহেব বসে আছেন। পরে তাকে জরিমানা মওকুফ করার জন্য অনুরোধ করলে তিনি বলেন সরকারি জরিমানা কমানোর কোন সুযোগ নেই। 


পরে আব্দুল জলিল টিআই খসরুর হাতে জরিমানা বাবদ ২ হাজার টাকা দিলে ক্ষেপে উঠেন তিনি। তিনি বলেন, পুলিশ বক্সে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। কেন ক্যামেরার সামনে টাকা দেয়া হল? আব্দুল জলিল বলে, সরকারি ফাইন যেহেতু, ক্যামেরার সামনে দিলেই কি আর পেছনে দিলেই কি? পরে আব্দুল জলিল সহ আমাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়। আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন তিনি। পরে আমাকে আবার ডেকে নেয় পুলিশ বক্সের ভেতর। তারপর আমাকে ইচ্ছামত চড় ঘুষি কিল থাপ্পড় মারতে থাকে। আমাকে গ্রেপ্তার করার ভয়ও দেখায়। পরে আমার পোশাক কারখানায় আইডি কার্ড দেখালে আমাকে ছেড়ে দেয়। 


ছালেক মিয়াকে এরপরে কোনদিন দেখলে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের সেই কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল বলেন, শফিকুলের রিকশা জন্য পরে ঠিকই টাকা দিতে হয়েছে। ২ হাজার টাকা দেয়ার পর রিকশা ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু এ টাকার কোন রশিদ দেয়নি। যদি সরকারি জরিমানাই হত তাহলে সিসি ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে তার সমস্যা কি? ভুক্তভোগী ছালেক মিয়া ও আব্দুল জলিল এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছেন। এ সংক্রান্ত এক লিখিত অভিযোগ ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার ও ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন তারা। 


কথা হয় রিক্সাচালক শফিকুলের সাথে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার এক রোগীকে হাসপাতালে নামিয়ে ফেরার পথে আমার রিক্সাটি আটক করে পুলিশ বক্সের ট্রাফিক পুলিশেরা। পরে আমি আব্দুল জলিল ও ছালেক ভাইকে জানাই। তারা আসলে তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। টিআই খসরু সাহেবের মুখের ভাষা অনেক খারাপ। তিনি গালিগালাজ করেন। টাকা নিয়ে ঝামেলা হওয়ার পর আমাকে আর সেখানে থাকতে দেয়নি। আমার কাছ থেকে জরিমানার কথা বলে টাকা ঠিকই রেখেছে কিন্তু কোন রশিদ দেয়নি। পরে আমার রিক্সা আমাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।


এ ব্যাপারে অভিযুক্ত টিআই খসরু পারভেজ বলেন, কাজ করলে অভিযোগ থাকবেই। আপনারা যাচাই করে দেখেন। যারা কাজ করেনা তাদের কোন অভিযোগ থাকেনা। এসপি বরাবর লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ অভিযোগের ব্যাপারে কিছু জানিনা। এ ব্যাপারে আমার কোন মাথাব্যাথাও নেই।ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো: আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, এমন অভিযোগ আমার কাছে এখনও পৌছেনি। সিসি ক্যামেরার সামনে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা অনেক সময়ই এমন অভিযোগ পাই। তবে তদন্ত করলে দেখা যায় সত্যতা নেই। রশিদ ছাড়া টাকা আদায়ের তো কোন প্রশ্নই ওঠেনা। যদি এমন কিছু হয় তাহলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।প্রসঙ্গত, এর আগে পুলিশি হয়রানির হাত থেকে নিজের অটোরিক্সা বাঁচাতে এক রিক্সাচালক নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ২০১৭ সালের ৩০ জুন শুক্রবার বাইপাইলের এই ট্রাফিক বক্সের সামনেই আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় শামীম সিকদার (৩৫), এতে শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে যায় তার।


সময় জার্নাল/ এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল