সময় জার্নাল ডেস্ক:
ইউরোপের দেশ গ্রিসের ইতিহাসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭ জনের তালিকায় এক প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। গত ১ মার্চ গভীর রাতে দেশটির লারিসা শহরের কাছে মর্মান্তিক এ ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মো. ইদ্রিস (৪০)।
সোমবার (৬ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। গ্রিসের লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত ইদ্রিসের কাপড়ের আলামত থেকে ডিএনএসহ বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করে। পরে লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ দূতাবাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
নিহত মো. ইদ্রিস চট্টগ্রাম হাটহাজারী উপজেলার ৮ নম্বর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সাহেব মিঞার ছেলে।
জানা গেছে, গত ১ মার্চ স্থানীয় সময় মধ্যরাতে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে একটি ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। যাত্রীবাহী ট্রেনটির প্রথম দুটি বগিতে আগুন ধরে যায়। এতে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয় বগি দুটি। এ ঘটনাটি গ্রিসের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন দেশটির অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী কোস্টাস কারামানলিস। এছাড়া ঘটনার পরপরই লারিসা শহরের স্টেশনমাস্টারকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে গাফিলতির কারণে নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
এ ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না বাংলাদেশি অভিবাসী মো. ইদ্রিসের। তার সহকর্মীরা তাকে না পেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসকেও অবগত করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাস তাৎক্ষণিক গ্রিসের লারিসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন হাসপাতাল মর্গে বেশ কয়েকটি অজ্ঞাত মরদেহ ছিল। গ্রিসের একটি টিভি চ্যানেলও তার ছবি দিয়ে সংবাদ প্রচার করে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের প্রথম সচিব বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিভিন্ন তথ্য ও ব্যবহৃত কাপড় সংগ্রহ করে। পরে তারা কাপড় নিয়ে ডিএনএ টেস্ট করে নিশ্চিত হয়। পরিচয় শনাক্ত করে দূতাবাসে জানানো হয়। তার লাশ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান।’
সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ভাগ্য বদলের আশায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছিলেন মো. ইদ্রিস। পরে সেখান থেকে ইউরোপের দেশ গ্রিসে চলে যান। গ্রিসে বসবাসের অনুমতি পেয়ে পরিবারের মা, ভাইবোনদের নিয়ে ভালোই চলছিল দিনগুলো। প্রায় তিন বছর আগে দেশে ছুটিতে এসে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন ইদ্রিস। তার এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সময় জার্নাল/এলআর