শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তাল জনতা দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন

সোমবার, মার্চ ৬, ২০২৩
উত্তাল জনতা দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন

মোঃ দুলাল মিয়া:

২৩শে ফাল্গুন,১৩৭৭ বঙ্গাব্দ অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রোজ রবিবার বিকাল ৩ টার সময় জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার মঞ্চে অধিষ্ঠিত হলেন তার অমর কবিতাটি শোনানোর জন্য।উত্তাল জনতা দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে জাতির পিতার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলেন কবি কখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিবেন।
জাতির পিতা তার অমর কবিতা শুরু করলেন"ভাইয়েরা আমার,আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি"
অলিখিত ও অপ্রাতিষ্ঠানিক ১৮ মিনিটের বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক বাঙ্গালীর উপর নির্যাতনের ২৪ বছরের ইতিহাস।

৭ই মার্চের ভাষণে জাতির পিতার দূরদৃষ্টি ছিলো স্বাধীনতার প্রতি।তাইতো সেদিন তিনি জনসম্মুখে ৪টি দাবি উত্থাপন করেছিলেন
১/চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে 
২/সৈন্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া
৩/গণহত্যার তদন্ত করা
৪/নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

যার মধ্যে নিহিত ছিল বাঙালীর স্বপ্নের স্বাধীনতার বীজ।

বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বলেছেন"৭ই মার্চের ভাষণই ছিলো বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। 
রাম নাথ কোবিন্দ বাংলাদেশ সফরে এসে বলেছিলেন"বঙ্গবন্ধুর ভাষণে আমি বিদ্যুতায়িত হয়েছিলাম" 
বর্ণবাদ বিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন "৭ই মার্চের ভাষণ ছিলো স্বাধীনতার মূল দলিল"
কিউবার অবিসংবাদিত নেতা ফিদেল ক্যাস্টো বলেছিলেন"শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ শুধুমাত্র একটি ভাষণ নেয়,এটি একটি অনন্য রণকৌশলের দলিল"

এই ভাষণের পিছনে জাতির পিতার অনুপ্রেরণা এবং সাহস জুগিয়েছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।যিনি বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা দিয়েছেন প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে। জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণ পাল্টে দিয়েছিলো বাঙালির মানচিত্র,জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সংগীত।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের মতো এমন একটি দিনের অপেক্ষায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু,কবে বাঙালিকে মুক্তির সনদ পাঠ করে শোনাবেন।

বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শীতা লক্ষ করা যায় ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানের নাম যখন"বাংলাদেশ "রাখেন। ৭০ এ জাতীয় পতাকার ডিজাইন নিশ্চিতকরণ এবং ৭১ সনে জাতীয় সংগীত নির্ধারণ ছিলো একটি অসাম্প্রদায়িক ও স্বাধীন বাংলাদেশ বিনির্মানের পটভূমি।

জাতির পিতার এই ভাষণে ফুটে উঠেছিলো গণতান্ত্রিক,অসাম্প্রদায়িক,সমাজতন্ত্র এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৫ম তফসিলের ১৫০(২) অনুচ্ছেদে ৭ই মার্চের ভাষণটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
২০১৭ সালের ৩০শে অক্টোবর ইউনেস্কোর তৎকালীন মহাসচিব ইরিনা বোকাভা জাতির পিতার ভাষণকে"Memory of world international register" অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন"
তরুণ প্রজন্মের কাছে ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও পটভূমি তুলে ধরতে রচিত হয় ই-বুক ও মোবাইল এ্যাপস"রাজনীতির মহাকাব্য" নির্মিত হয় প্রামাণ্য চিত্র "দা স্পিচ" ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা,সাম্প্রদায়িক মানসিকতা ও দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৪ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা,জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি রচিত হয়। ৭ই মার্চের অগ্নিঝড়া ভাষণে উজ্জীবিত হয়েছিল ৭ কোটি বাঙালি।শহীদ হন ৩০ লক্ষ বাঙালি,সম্ভ্রম হারান ২ লক্ষ মা-বোন।জাতির পিতার এই ভাষণ স্বাধীনতাকামী বাঙালির মনে প্রেরণা হয়ে কাজ করেছিল।পৃথিবীর সমস্ত নিপীড়িত,নির্যাতিত,শোষিত মানুষের মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে এই ভাষণ।বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারি হয়ে কাজ করবে এটি।
জাতির পিতার এই ভাষণ কালের গণ্ডি পেরিয়ে যুগযুগান্তর বেচে থাকবে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীদের অনুপ্রেরণা হয়ে।

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণটি সমাপ্ত করেছিলেন
অপ্রতিরোধ্য বাঙ্গালীর প্রাণের সঞ্চার ঘটিয়ে। তিনি বজ্র কণ্ঠে বলেছিলেন "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,জয় বাংলা "

লেখক: মোঃ দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,সরকারি তিতুমীর কলেজ।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল