সর্বশেষ সংবাদ
কেএমএ হাসনাত: সরকারি ব্যয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মধ্যমেয়াদে সরকারি ব্যয় আগামীতে জিডিপির সাড়ে ১৫ শতাংশের ওপরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।এ বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, সরকার ক্রমান্বয়ে জিডিপির শতাংশ হারে ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় ছিল জিডিপির ১৩ শতাংশ, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (সংশোধিত বাজেটে) ১৪ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার সংস্কার কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের ফলেই তা সম্ভব হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সরকারি ব্যয় অনেক কম। ২০২১ সালে যেখানে বাংলাদেশে সরকারি ব্যয় ছিল জিডিপির ১৩ শতাংশ, সেখানে ভারতে ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে তা ছিল ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া, উন্নত অর্থনীতিতে সরকারি ব্যয় বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। আগামীতে সরকারি ব্যয় বাড়ানোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর এ জন্য রাজস্ব বা আয় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল জিডিপির শতাংশ হিসেবে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে তা কমে হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ।এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী যদি আমার বাজেট তৈরি করতাম তাহলে চলতি অর্থবছরে বাজেটের আকার অবশ্যই সাত লাখ কোটি টাকার বেশি হতো। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। শেষমেশ বাজেটের আকার ছয় কোটি ৭৮ লাখ ২৪ কোটি টাকা গেছে। এর অন্যতম কারণ, সম্পদের স্বল্পতা, এক দিকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আশানুরূপ আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্য দিকে, বিদেশি সহায়তা কাঙ্খিত হারে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে গত দুই বছরে কোভিডজনিত কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। এর ফলে রাজস্ব আদায়েও এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দেয়। ফলে রাজস্ব আয় ভালো না হওয়ায় সরকারের পক্ষে ব্যয়ও বেশি করা সম্ভব হয়নি। সরকারের আয় যে আশানুরূপ বাড়ছে না, তার প্রমাণ পাওয়া যায় জিডিপির শতাংশ হিসেবে এনবিআর অবদান বছরের পর বছর ধরে সাড়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। যেমন, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জিডিপির শতাংশে এনবিআর অংশ ছিল সাড়ে ৭ ভাগ। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এটি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৫ ভাগে। কিন্তু পরে তা সংশোধন করে আট দশমিক ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে এই হার ধরা হয়েছে আট দশমিক ৩ শতাংশ, পরবর্তী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯ শতাংশ। তবে প্রাক্কলন যাই করা হোক বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই হার অর্জন করাও দুরূহ হয়ে পড়বে। অর্থ বিভাগ ও আইএমএফ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২১ সালে বেশ কয়েকটি দেশে সরকারি ব্যয় জিডিপির শতাংশে ২০ ভাগের উপরে ছিল । এর মধ্যে, ফ্রান্সের ৫৭ শতাংশ, সুইডেন ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়া ৩৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র ৩৬ শতাংশ ৮ শতাংশ, চীন ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারত ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ, মালয়েশিয়া ২২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ভিয়েতমান ২০ দশমিক ৪ শতাংশ।সূত্র জানায়, সরকারি ব্যয় বাড়ানোর জন্য যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা নির্ভর করে রাজস্ব আহরণের ওপর। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নানা উদ্যোগ নিয়েও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না। ফলে সংশোধিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হচ্ছে। সময় জার্নাল/এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল