ইসাহাক আলী, নাটোর:
‘শেষ আয়োজন! এবং শেষ ঠিকানা! কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক। জিন্দা থাকলে নিন্দা তো হবেই, সাদা কাপড়ে জড়িয়ে গেলে ভালোবাসার মানুষের অভাব হয়না! সময় যখন থমকে যাবে, শেষ হবে সফর! বিদায় দেবে বন্ধু-স্বজন, স্বাগত জানাবে পরপার।’ এমন হৃদয়স্পর্শী স্ট্যাটাস যখন সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন ফেসবুক লাইভে তখন তার নিকটাত্মীয় ও স্বজনরা অনেকেই তা দেখছেন। কমেন্টস করে ফোন করে অনেকেই বারণ করার চেষ্টা করেও ফেরাতে পারেননি একটি তরতাজা প্রাণকে। বৃষ্টিস্নাত রাতে যখন বাড়ির অন্যরা ঘুমিয়ে তার জীবনের শেষ আয়োজন নিজেই করে সাঙ্গ করেছেন জীবন খেলা। গলায় রশি পেচিয়ে আত্মহনন করেই পরপারে চলে গেলো একটি তরতাজা প্রাণ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার এমন ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুরের মশিন্দা ইউনিয়নের কাচিকাটা এলাকায়। আত্মহননকারী রঞ্জু ওই এলাকার হরফ আলীর ছেলে এবং কাছিকাটা স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তবে আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন জানান, রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে ফেসবুক লাইভ চালু করে নিজ ঘরে চালের আড়ার সঙ্গে রশি পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই শিক্ষার্থী। পরে পরিবারের লোকজন জানতে পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তার মরদেহটি উদ্ধার করে।
ঘটনার আগে রঞ্জু আহমেদ ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘শেষ আয়োজন! এবং শেষ ঠিকানা! কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক। জিন্দা থাকলে নিন্দা তো হবেই, সাদা কাপড়ে জড়িয়ে গেলে ভালোবাসার মানুষের অভাব হয়না! সময় যখন থমকে যাবে, শেষ হবে সফর! বিদায় দেবে বন্ধু-স্বজন, স্বাগত জানাবে পরপার।’
তার কিছুক্ষণ পর ফেসবুকে আরেক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘সবাই ভালো থেকো, আমিও ভালো থাকবো ওপারে।’
ওসি আব্দুল মতিন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এর কারণ অনুসন্ধ্যানে কাজ করছে পুলিশ। ময়না তদন্ত ও মামলার তদন্ত শেষে সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এমআই