শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিবিএস’র প্রতিবেদন,দেশে বেকার ২৬ লাখ

বৃহস্পতিবার, মার্চ ৩০, ২০২৩
বিবিএস’র প্রতিবেদন,দেশে বেকার ২৬ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদন :


করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরও দেশে বেকার সংখ্যা বাড়েনি, বরং কিছুটা নিম্নমুখী। মোট বেকার ২৬ লাখ ৩০ হাজার জন।এর মধ্যে পুরুষ বেকার ১৬ লাখ ৯০ হাজার এবং নারী বেকার ৯ লাখ ৪০ হাজার জন। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বেকার ছিল সর্বোচ্চ ২৯ লাখ ৫০ হাজার জন এবং চতুর্থ প্রান্তিকে ছিল সর্বনিম্ন ২৩ লাখ ২০ হাজার জন। ২০১৬-১৭ সালের জরিপে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ জন। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

বিবিএস’র মহাপরিচালক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহছানে এলাহী এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। শ্রমবাজার তথ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আজিজা রহমান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

এতে বক্তব্য দেন বিবিএসের ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড লেবার উইংয়ের পরিচালক কবীর উদ্দিন আহমেদ এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দিপংকর রায়।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, অর্থনীতিতে একটা রূপান্তর ঘটছে। গ্রামে গেলে এটি বোঝা যায়। নারীদের পারিবারিক কাজ শ্রম শক্তির বাইরে আছে-এটা দুঃখজনক। এটা যোগ করা হলে জিডিপি ৪৫০ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ৬৫০ বিলিয়ন হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, করোনার সময়ের এক জরিপে দেখা যায়-ঢাকা শহরে দারিদ্র্য ও বেকার সংখ্যা কমেছে। আমরা সীমিত লকডাউন করেছি। শিল্পকারখানা খোলা ছিল। দ্রুত প্রণোদনার ব্যবস্থা করা হয়। ফলে করোনাকালে ঢাকায় উলটো চিত্র বিরাজ করে। 


পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, করোনাকালে শহর থেকে অনেক মানুষ গ্রামে গেছেন। সেখানে তারা কৃষিতে যুক্ত হন। প্রচলিত শস্যের বাইরে শস্য বহুমুখীকরণে তারা ভূমিকা রেখেছেন। ফুল, ফল, মাছসহ নানা বৈচিত্র্যময় চাষে তারা যুক্ত হন। পাশাপাশি পতিত জমিও চাষের আওতায় চলে এসেছে। ফলে কৃষিতে শ্রমশক্তি বেড়েছে। 


এদিকে, বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, মানুষ কিছু না কিছু তো করেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো-আয় কতটা করে সেটি নিয়ে। কৃষি ও সেবা খাতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। দেখতে হবে সেখানে আয় কেমন হচ্ছে। কিন্তু এসব খাতের আয় দিয়ে সংসার চালানো শ্রমিকের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। সেবা খাতে বড় বড় ফাইভ স্টার হোটেল অথবা অন্যসব সেবা প্রতিষ্ঠানে আয় বেশি থাকলেও চায়ের দোকান, ছোট হোটেল, রিকশাওয়ালাহসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর কাজ থাকলেও আয় কম। এটিই গুরুত্বপূর্ণ। এখন মানুষ একটু সুযোগ পেলেই বিদেশে চলে যাচ্ছে। কারণ একই কাজ করে বিদেশে আড়াই থেকে তিনগুণ আয় করা যায়। 


শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী-দেশে গড় বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং নারী বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০১৬-১৭ সালের তুলনায় ২০২২-এর জরিপে দেখা যায়-বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ থেকে কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি নারী বেকারত্বের হার কমেছে। শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারীর হার ৬১। এর মধ্যে পুরুষ ৭৯ দশমিক ৭১ এবং নারী ৪২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ১২ বছরে শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণকারীর হার ২০১০ সালে ৫৯ দশমিক ৩ থেকে ২০২২ সালে ৬১ শতাংশ হয়েছে।

এছাড়া দেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৮০ হাজার এবং নারী ২ কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার। গত ৫ বছরে (২০১৬-১৭ থেকে ২০২২) ৯৯ লাখ ১০ হাজার শ্রমশক্তি শ্রমবাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-মোট কর্মক্ষম ব্যক্তির মধ্যে কৃষি খাতে ৩ কোটি ২২ লাখ, শিল্পে ১ কোটি ২০ লাখ ৫ হাজার এবং সেবা খাতে ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নিয়োজিত রয়েছেন। কৃষি ও সেবা খাতে শ্রমশক্তি বেড়েছে এবং শিল্পে কমেছে। শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার ৪২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এরমধ্যে গ্রামাঞ্চলে ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। কর্মে নিয়োজিত যুব জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২ কোটি ১ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি ৬৮ লাখ ২ হাজার হয়েছে। পাশাপাশি যুব নারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনুষ্ঠানে বলা হয়-আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংজ্ঞা অনুযায়ী শ্রমশক্তির বাইরে বলতে সাধারণত ছাত্র, অসুস্থ, বয়স্ক, কাজ করতে অক্ষম, অবসরপ্রাপ্ত, গৃহিণীরা বিবেচিত হবেন। যারা আগের ৭ দিনে কোনো কাজ করেননি বা কাজ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তারা বেকার।


কর্মে নিয়োজিত বলতে বোঝানো হয়েছে-আগের ৭ দিনে যারা ১ ঘণ্টার জন্য বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময়ে অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য ও সেবা উৎপাদনমূলক কাজ করেছে তারা।



এসএস


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল