নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের বৈকালিক প্রাইভেট প্র্যাকটিস কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। প্রথমিকভাবে সারাদেশের ৫১টি হাসপাতালে চালু হলেও ধাপে ধাপে সকল হাসপাতালে এ সেবা চালুর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরকারের বিরাট এ প্রদক্ষেপ পরিচালনা ও বাস্তবায়নে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নীতিমালায় এ সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়ে।
এতে বলা হয়, ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে সরকারি স্থাপনা ও বিদ্যমান সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে সরকারি হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত অফিস সময়ের পর চিকিৎসা সেবা প্রদানে সরকার ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নীতিমালা-২০২৩ প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালা সকল সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের অফিস সময়-পরবর্তী (সাপ্তাহিক ছুটি এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া) ‘ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস নীতিমালা-২০২৩’ নামে অভিহিত হবে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
নীতিমালায় যা বলা হয়েছে
১. মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো জনসাধারণের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান সুবিধা বিবেচনা করে বহির্বিভাগে বা প্রতিষ্ঠানের সুবিধাজনক স্থানে কনসালটেশন সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।
২. সেবা প্রত্যাশীরা নির্ধারিত ফি-এর বিনিময়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, এমবিবিএস, বিডিএস অথবা সমমানের চিকিৎসকদের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। তবে রিপোর্ট দেখানোর ক্ষেত্রে রোগীকে কোনো ফি প্রদান করতে হবে না।
৩. হাসপাতালের সার্বিক সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে শল্য চিকিৎসার (সার্জারি) প্রয়োজনে নির্ধারিত মূল্যে অপারেশন থিয়েটার ও অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট ব্যবহার করে সার্জারি সেবা প্রদান করবে।
৪. কোন চিকিৎসক জরুরি প্রয়োজনে অনুমোদিত ছুটিতে থাকলে সমমর্যাদা সম্পন্ন অন্য কোন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন।
৫. কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এ চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ রাখা যাবে না।
৬. রোগীদের তথ্য যথাযথভাবে রেজিষ্টারে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
৭. ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানরা পালন করবেন।
৮. কনসালটেশন রুমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স বা এটেনডেন্ট সহযোগী হিসেবে রাখতে হবে।
৯. এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসা সেবায় বর্হিবিভাগে বর্ণিত কার্যক্রমসমূহ অনুসরণ করতে হবে। যেমন— পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক, ইউএইচএফপিও সংশ্লিষ্ট সকলের রোস্টার ডিউটি প্রণয়ন করবেন। রোগীর সংখ্যা বা চাহিদা অনুযায়ী জনবল নির্ধারণ করতে হবে এবং হাসপাতালের অবকাঠামো এবং সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
দেশের সকল সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এমআই