মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
পূর্ব শক্রতার জেরে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার নবাবপুরে চাঞ্চল্যকর রজব আলী হত্যাকান্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিনের পলাতক আসামি মো. মিলন সিকদার ওরফে চোপা মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে ঝালকাঠির নলছিটি থানার পুলিশ। গতরাতে (শনিবার গভীর রাতে) তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের সহযোগিতায় নলছিটির পুলিশ রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে মিলনকে গ্রেপ্তার করে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. মিলন (৩৮) নলছিটি উপজেলার চৌদ্দবুড়িয়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান সিকদারের ছেলে।
পুলিশ জানায়, আসামি মিলন ও রজব আলী ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। তাঁরা দুজনেই মাদকাসক্ত ছিল। দুজনেই পাড়ার বন্ধুদের সাথে দল বেধে মাদক সেবন করত। একদিন মাদক সেবনের সময় তাদের হাতে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তখন রজব আলী তাদের মাদক সেবনের সঙ্গী সজিব নামে একজনের মোবাইল জামানত রেখে মাদকের টাকা সংগ্রহ করে সকলে মিলে দল বেধে মাদক সেবন করে। পরবর্তীতে জামানতের টাকা পরিশোধ না করেই তাঁরা ভিকটিমের নিকট জামানত দেওয়া মোবাইলটি দাবি করেন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই রায়সাহেব পাড়া এলাকার ছেলেরা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি জিকুর নেতৃত্বে আসামি মো. মিলন সিকদার ওরফে চোপা মিলনসহ রহিম ওরফে আরিফ, আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শাহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু ভিকটিম রজব আলীকে শায়েস্তা করার জন্য পরিকল্পনা করে। ২০১১ সালের ২৪ জুলাই রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানাধীন নবাবপুরে মোবাইলের দোকানে রজব আলী টাকা রিচার্জ করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জিকুসহ আরও চার-পাঁচজন মিলে রজব আলীকে ঢাকা জজ কোর্টের পিছনে ১৬/এ কোর্ট হাউজ স্ট্রিটের পূর্ব পাশে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকে অপেক্ষায় থাকা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শাহীন চাঁন খাদেমসহ সকলে মিলে রজব আলীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় রজবের ভাই জুম্মন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালে ৫ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালত ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৯ সালের ১ আগস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জিকু, রহিম ওরফে আরিফ ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগারকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় এবং আসমি মিলনসহ ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, গোয়েন্দা তৎপরতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শনিবার রাতে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এমআই