দীপঙ্কর পোদ্দার অপু, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস ও ভবনে জাতীয় বা বিশেষ দিবস ছাড়া জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। বিষয়টি মহান স্বাধীনতা এবং প্রচলিত আইনের অবমাননা উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এবং নতুন প্রজন্ম বলছেন, এর মাধ্যমে অবমূল্যায়ন হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক জাতীয় পতাকার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়, খাদ্যগুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয়, সহকারী প্রকৌশলীর (ক্ষুদ্র সেচ) কার্যালয়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ও ভেটেরিনারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি অফিস ও ভবনে জাতীয় দিবসসমূহ ছাড়া নিয়মিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাহাদুল আখতার তপন বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের লাল সবুজের পতাকা। এই পতাকার মাধ্যমে সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে চেনে। সেই জাতীয় পতাকা নিয়মিত উত্তোলন না করে সেটির অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এটা সঠিক নয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের অফিসের নতুন ভবন করার সময় জাতীয় পতাকার পুরনো স্ট্যান্ডটি ভাঙ্গা পড়েছে। এ কারণে তোলা হচ্ছে না। আগামীকাল থেকেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ণ চন্দ্র সরকার বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই। আমাদের কোন অফিসেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। তাই আমরাও উত্তোলন করি না।
এ ব্যাপারে বীরমুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর উপ-প্রধান এবং ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ শাহ মো. আবু জাফর বলেন, ওনারা কেন উত্তোলন করেন না, তা ওনারাই ভাল বলতে পারবেন। স্বাধীনতার প্রতি ওনাদের কোন অনীহা আছে কি-না, না-কি অলসতার জন্য তোলেন না, তা তারাই বলতে পারবে। তবে সব সরকারি অফিসেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা উচিত এবং এটা ওনাদের নৈতিক দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২-তে (সংশোধিত ২০১০) জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিধিবিধান আছে। জাতীয় পতাকা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের নিদর্শন। তাই সব সরকারি ভবন, অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভবনে সব কর্মদিবসে পতাকা উত্তোলনের বিধান রয়েছে।
সময় জার্নাল/