বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

ইবি ক্যাম্পাসজুড়ে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে পার্থেনিয়াম, নির্লিপ্ত প্রশাসন

শনিবার, মে ১৩, ২০২৩
ইবি ক্যাম্পাসজুড়ে বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে পার্থেনিয়াম, নির্লিপ্ত প্রশাসন

সাইফ ইব্রাহিম,ইবি প্রতিনিধি:

পার্থেনিয়াম, সাদা ফুল ও চন্দ্রমল্লিকার ন্যায় পাতাবিশিষ্ট একটি আগাছা। এটি গাজর ঘাস হিসেবেও পরিচিত। দেখতে সাধারণ আগাছার মতো মনে হলেও এর আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত পুরোটাই ক্ষতিকর। বিষাক্ত মৃত্যুদূত এই নীরব ঘাতক আগাছাটি তার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে।

দেখা যায়, ক্যাম্পাসের জিয়া মোড়, পেয়ারাতলা ক্রিকেট মাঠ, ফুটবল মাঠ, মফিজ লেক, অধিকাংশ রাস্তার ধার, শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা ও বঙ্গবন্ধু পকেট গেইটসহ শহীদ জিয়াউর রহমান হল এলাকা এই আগাছাটিতে ভরে গেছে। একাডেমিক ভবন এলাকাতেও এর উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলসমূহের রুমের পাশেও শিকড় গেড়েছে এই বিষাক্ত আগাছাটি।

বিষাক্ত এই আগাছাটির ফুলের রেণুতে রয়েছে 'পার্থেনিন,' নামক  'সেস্কুটার্পিন ল্যাকটোন' জাতীয় বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। ফলে নিশ্বাসের সঙ্গে নাকে প্রবেশ করলে জ্বর, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি হয়। এবং ক্ষতস্থানে রক্তের সাথে মিশে চর্মরোগের সৃষ্টি করে। এছাড়া যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এর রস তাদের চামড়ায় লাগলে সেখানে ক্যান্সার হতে পারে। এটি মাটিতে নাইট্রোজেন আবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়াকেও ব্যাহত করে।

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ইনজামুল হক বলেন, 'এ ধরনের যে আগাছাগুলো, এর রেণুর সংস্পর্শে গেলেই আমরা জ্বালাপোড়া, ব্যাথা এবং বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারি। এটি গবাদিপশু, মানুষ ছাড়া পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। এ ধরনের আগাছাগুলো এর আশেপাশের মাটি ও উদ্ভিদসমূহেরও ক্ষতি সাধন করে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সব  ধরনের আগাছা নিধনসহ সর্বোপরি ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে তাহলে শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, সেটি ইকোসিস্টেমের জন্যও ভালো হবে।'

এদিকে আগাছাটির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অবগত নন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। দেখা যায়, ক্রিকেট ও ফুটবল মাঠে খেলার সময় ঝোপের ভেতর দিয়ে অনায়াসেই চলাচল করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে নিজের অজান্তেই বাড়ছে চর্মরোগ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সারের মতো জটিল রোগসমূহে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ রিয়াজ পারভেজ  বলেন, 'এর আগে আগাছাটি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তেমন অবগত নয়।  যার কারণে হয়তো নির্দ্বিধায় আমরা সেগুলোর সংস্পর্শে চলে যাচ্ছি এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকিতে পড়ছি। এই বিষাক্ত আগাছাগুলো অতিদ্রুত পরিষ্কারের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।'

একটি পার্থেনিয়ামের আগাছা থেকে জন্ম নিতে পারে প্রায় ৪-৫ হাজার আগাছা। তাছাড়া এর বীজ হালকা ও প্যারাসুটের ন্যায় হওয়ার কারণে দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে এর বংশবিস্তারও দ্রুত হয়। রমজান ও ঈদের সময় দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসের সর্বত্র ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে এই আগাছাটি। ক্যাম্পাস খোলা হওয়ার প্রায় অর্ধ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও কাটা হয়নি এই আগাছাগুলো। আগাছাটির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত থাকলেও সেগুলো কাটার ব্যাপারে বরাবরের মতোই উদাসীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট অফিসের প্রধান শামছুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে কোথাও এমন ধরনের আগাছা রয়েছে কি না সে বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।  তিনি বলেন, 'হলসমূহ ও খেলার মাঠ পরিষ্কার করার জন্য হল কর্তৃপক্ষ ও ক্রীড়া বিভাগের নিজস্ব মেশিন ও লোকজন রয়েছে। অনেক সময় তারা যদি পরিষ্কার না করে তখন আমরা লোক পাঠিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করাই। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর আমরা ঔইদিকে যাইনি। কোথায় কোথায় এই আগাছাগুলো আছে আমরা কালকে থেকেই পরিষ্কার করবো।'

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল