সর্বশেষ সংবাদ
শেখ আদনান ফাহাদ : তারিক সালমান নামে একজন ইউএনও কে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হাত বেধে আদালতে নিয়ে যাওয়া হল। আমি প্রতিবাদ করলাম। কলাম লিখলাম।
একজন নারী ইউএনওকে কক্সবাজারে মেম্বার চেয়ারম্যান আর লোকাল সাংবাদিকরা মিথ্যা অপবাদ দিল। মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে অপসারণ করা হল। একমাত্র তখন আমিই প্রতিবাদ করলাম। এডমিন ক্যাডারকে বললাম, এটা ঠিক হয়নি। ঐ নারী ইউএনও কোনো অন্যায় করেননি। মন্ত্রণালয় তার ভুল বুঝতে পারল।
রিকশাচালক, পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট থেকে শুরু করে প্রায় সব বিষয়েই যতটুকু পারি ন্যায়ের পক্ষে লেখালেখি করি।
শক্তি কোথায় পাই? ৭৩ এর অধ্যাদেশ। জাতির পিতা এটা আমাদের দিয়ে গেছেন। দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এর সুবিধা পান। যদিও কেউ কেউ এর অপব্যাবহার করেন।
আমলারাই ভাল বলতে পারবেন তাঁদের সমস্যা কোথায়? আমরা যখন বিপদে পড়ি তখন আমলারা কিছু লিখতে পারেন না, বলতে পারেন না। কারণ তাঁদের হাত পা বাঁধা। আইন, এসিআর, নানা বিধি-নিষেধ আছে। আমাদেরও অনেক নিয়ম মানতে হয়। তবে আপাত দৃষ্টিতে আমরা স্বাধীন। এই স্বাধীনতার শক্তিতে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করি। এই শক্তিটুকু আপনারা কেড়ে নিবেন না।
একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলে সত্য ও ন্যায়ের যুক্তিতে।যে কোনো বুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষার্থীও এটা বুঝতে পারে। আমলারা নিজেরাই নিজেদের অবস্থান থেকে চিন্তা করুক। যখন প্রতিবাদ করার কেউ থাকেনা, যখন তাঁরা অসহায় থাকেন তখন কিন্তু আমি, আমরাই আওয়াজ তুলি। এই আওয়াজ তোলার রাস্তা আপনারা বন্ধ করবেন না।
শিক্ষার পরিবেশ আমলাতন্ত্র দিয়ে চলে না। একজন আমলা কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে সফল হতে পারবেন না। শুধু টাকা পয়সার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় চলে না। সামান্য বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় চলে। আমার বিভাগে বছরে মাত্র ২ লাখ টাকা আসে বিভাগের শিক্ষা সরঞ্জামাদি ক্রয়ে। কারণ বাজেটের বরাদ্দ দেশের আমলাতন্ত্রের ভরণপোষণে খরচ হয়। এখানে অনেক মেধা খাটিয়ে সীমিত বাজেট শিক্ষা খাতে খরচ করতে হয়। আবার শুধু অর্থ ঢেলে দিলেও একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলে না, চলবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেফিন স্যার কিংবা আমাদের জাহাঙ্গীরনগরের ভিসি স্যার যেভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কথা শুনেন এটা কোনো সামরিক বা বেসামরিক আমলা পারবেন না। এটা সম্ভব না। ধমক দিয়ে, এসিআর এর শক্তিতে এখানে প্রশাসন চলে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা লিবারেল, ডেমোক্রেটিক প্রশাসন চলতে পারে শুধু শিক্ষকদের দিয়ে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শবিরোধী, শিক্ষা ভাবনাবিরোধী সকল সিদ্ধান্ত থেকে আমলাতন্ত্রকে সরে আসতে হবে। সব দিকে নজর দেয়া উচিত হচ্ছেনা। রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় শিক্ষা কমিশন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে যুক্তি ও বিবেকের পথ উন্মুক্ত করার অনুরোধ জানাই।
শিক্ষা কমিশনের দায়িত্ব শিক্ষকরাই নিবেন। আমলারা স্থানীয় সরকার চালাবেন। সবজায়গায় নিয়ন্ত্রক হওয়ার চেষ্টা ব্রিটিশ কলোনিয়াল সিস্টেমকে মনে করিয়ে দেয়।
বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমলাতন্ত্রে আমূল পরিবর্তন আনবেন। কিন্তু তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পর কারা লাভবান হয়েছেন একটু সবাই হিসেব করবেন প্লিজ।
লেখক : শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল