শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ইবি ছাত্রলীগ নেতার সাথে কথা কাটাকাটির জেরে বাস ড্রাইভারকে মারধর, মহাসড়ক অবরোধ

বুধবার, মে ৩১, ২০২৩
ইবি ছাত্রলীগ নেতার সাথে কথা কাটাকাটির জেরে বাস ড্রাইভারকে মারধর, মহাসড়ক অবরোধ

ইবি প্রতিনিধি:


কুষ্টিয়া-খুলনা রুটে চলাচলকারী গড়াই পরিবহনের একটি বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজারকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়(ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিনসহ ৪/৫ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় দেড় ঘন্টা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক  অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।  ফলে দূর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা।


বুধবার (৩১ মে) দুপুর পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ মারধরের ঘটনা ঘটে।এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী বাস চালক তোফাজ্জল হোসেন সবুজ।


ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, কুষ্টিয়া থেকে বনি নামে একটি ছাত্র বাসে আসছিলো। বটতৈল থেকে তিনটি মেয়ে খুলনা যাওয়ার জন্য বাসে উঠলে তাদের বসাতে  ড্রাইভার তাকে সিট ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ধরে ধরে পথ থেকে লোক নিয়ে আসবেন আর আমরা সিট ছেড়ে দেব কেন? তখন এ নিয়ে উভয়ের মাঝে হালকা কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে পরে বাস ক্যাম্পাস গেইটের সামনে পৌঁছালে  বনি, জামিল ও তার চার পাঁচজন বন্ধু মিলে বাটাম দিয়ে ড্রাইভারের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এবং তার পকেটে থাকা পনেরো হাজার টাকাও নিয়ে নেয় ওরা। এছাড়া গাড়ির সুপারভাইজার ও হেলপারদেরও বেধড়ক মারধর করে।


এ ঘটনার প্রতিবাদে শেখপাড়া বাজারে রাস্তায় আড়াআড়িভাবে বাস রেখে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ বাস মালিক সমিতির শ্রমিকরা। পরে শৈলকূপা ও ইবি থানার পুলিশের সহায়তায় বাস মালিক সমিতির নেতাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সমঝোতায় প্রায় দেড় ঘন্টা পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।


ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন সবুজ বলেন, 'আমি তাকে সুন্দর করে বলেছিলাম যে মেয়েটাকে সিটে বসতে দেওয়ার জন্য। তখন সে বললো যে আপনারা ধরে ধরে পথে থেকে লোক ওঠাবেন,  আর আমরা আপনাকে সিট ছেড়ে দেব। পরে এটা নিয়ে ফোনে আরও চারজনকে ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইনগেইটের সামনে সবাই মিলে আমাকে গরু মারার মতো মারলো। ফুটবলের মতো আমার মুখের দুইপাশে অনবরত লাথি মারছে তারা। শুরুতে দুই তিন বার বাটাম দিয়ে যেভাবে মেরেছিলো, আমি যদি হাত দিয়ে না আটকাতাম তাহলে মাথায় লেগে আমি সেখানেই মারা যেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের দ্বারা এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই মানা যায় না। আমি তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।


এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি  বনি আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বাসে আমার সিটে ড্রাইভার অন্য একজনকে বসাতে চায়। এটা নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। সে আমার সাথে বেয়াদবি করছিলো। পরে ক্যাম্পাসের সামনে আসলে ১মিনিট কথা বলার জন্য আমি ওনাকে নিচে নামতে বলি। কিন্তু তিনি নিচে নামতে রাজি না হয়ে উল্টো 'কেন নামবো, কি জন্য ' বলে চিল্লাচিল্লি  শুরু করলে আশপাশে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তখন সেখান কারা কারা ছিলো তারা ওনাকে মারধর করে। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আর ওনার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতাও নেই।'


আরেক অভিযুক্ত লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী  জামিলের নিকট অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দুপুরে ওই সময় আমি সেখনে ছিলাম না। আমি ক্লাসে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।'


এদিকে দোষীদের অতি দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা আবদুস সালাম। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।


এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, 'ভুক্তভোগী যারা রয়েছেন আমরা তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। তাদের অভিযোগ শুনেছি। তারা মারধরকারী ৪/৫ জন ছিলো বলেছে। এর মধ্যে দুইজনের নাম বলেছে। আমরা প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।'


এসএম




Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল