রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

বাজেটে যেসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়লো

বৃহস্পতিবার, জুন ১, ২০২৩
বাজেটে যেসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়লো

নিজস্ব প্রতিনিধি:

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) এবং শুল্ক বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। 

এতে দাম বাড়বে কলম, থালাবাসন, চশমা ও রোদচশমা, টিস্যু, মোবাইল ফোন, গ্যাস সিলিন্ডার, সিগারেট, তরল নিকোটিন, বাসমতী চাল, কাজুবাদাম, খেজুর, বাইসাইকেল, আঠা, সিমেন্ট, সাধারণ ইট, সফটওয়্যার, বিদেশি লিফট ও বিদেশি স্যান্ডউইচ প্যানেলের।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় অর্থমন্ত্রী সংসদে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন। এ সময় বলপয়েন্ট কলম উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা তুলে নেয়ার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এতে কলম উৎপাদনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসবে। ফলে পণ্যটির দামও বাড়বে।

প্লাস্টিকের তৈরি থালা, বাটি ও অন্যান্য পণ্যের ভ্যাট আড়াই শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব এসেছে বাজেটে। টিফিন বক্স ও পানির বোতলে ভ্যাট আগের মতো থাকবে। অ্যালুমিনিয়ামের থালাবাসন ও রান্নাঘরের সরঞ্জামের ভ্যাট একই হারে বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

চশমার ফ্রেমের ওপর আমদানি শুল্ক এখন ৫ শতাংশ। তৈরি চশমার ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ। শুল্ক ফাঁকি রোধে ফ্রেমের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। রোদচশমা বা সানগ্লাসের (প্লাস্টিক ও মেটাল ফ্রেমযুক্ত) ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে আড়াই শতাংশ।

নতুন হার সাড়ে ৭ শতাংশ। কিচেন টাওয়েল, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু/পকেট টিস্যু, পেপার টাওয়েল ইত্যাদির ভ্যাট আড়াই শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদনে বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাটের হার দুই থেকে আড়াই শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে। দেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দামও বাড়তে পারে। কারণ এলপিজি সিলিন্ডার তৈরির দুটি কাঁচামাল ইস্পাতের পাত (স্টিল শিট) এবং ওয়েল্ডিংয়ের তার আমদানির করছাড় সুবিধা তুলে নেয়া হয়েছে। 

সিগারেটের সব মূল্যস্তর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি স্তরে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সিগারেটের দাম বাড়তে পারে। অবশ্য বিড়ির দাম না-ও বাড়তে পারে। কারণ বিড়িতে নতুন করে কর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়নি। সিগারেটে কর বাড়িয়ে বাড়তি ৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবারের বাজেটে।

তামাকজাতীয় পণ্য যেমন তরল নিকোটিনের ওপর ১৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ইলেকট্রনিক সিগারেট ও সমজাতীয় ইলেকট্রিক ভ্যাপোরাইজার ডিভাইসের যন্ত্রাংশের শুল্কহার বাড়িয়ে মূল পণ্যের সমান, ২১২ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ভ্যাপোরাইজারের দাম বাড়বে। এটি সাধারণভাবে ভ্যাপ নামে পরিচিত।

বর্তমানে সাধারণ বাসমতী চালের ওপর কোনো ভ্যাট নেই। তবে ফর্টিফায়েড বাসমতী চালে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আছে। শুল্ক ফাঁকি ঠেকাতে সাধারণ বাসমতী চালেও ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদেশি কাজুবাদামের মোট কর ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করা হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে উৎপাদিত কাজুবাদামকে সুরক্ষা দিতে এবার বাজেটে এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী।

খেজুরের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট ব্যাপকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বর্তমানে শুকনা খেজুরের ওপর এখন ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক রয়েছে। তবে সাধারণ খেজুরের ওপর নেই। তাই দুই ক্ষেত্রেই ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে। সঙ্গে থাকবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট।  বাইসাইকেলের কিছু যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে বিদেশি যন্ত্রাংশ ব্যবহারকারী বাইসাইকেলের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। আঠা (অ্যাডহেসিড/গ্লু) আমদানিতে ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে বিদেশি আঠার দাম বাড়বে।

সিমেন্টের মূল কাঁচামাল ক্লিংকারের আমদানি শুল্ক প্রতি টনে ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ক্লিংকারে শুল্ক একই হারে বেড়ে ৯৫০ টাকা হবে। যন্ত্রের সাহায্য ছাড়া তৈরি সাধারণ ইটে ভ্যাট (নন-রিফ্লেকটরি বিল্ডিং ব্রিকস) প্রতি হাজারে ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ করা হয়েছে। তবে বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটি ‘ফেসিংয়ে’ ব্যবহৃত ইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

সফটওয়্যার ও কাস্টমাইজেশন সেবার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে এই সেবার মূল্য বাড়তে পারে। বিদেশি কিছু সফটওয়্যারের ওপর ৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। অন্য ক্ষেত্রে হারটি ২৫ শতাংশ। শুল্ক ফাঁকি ঠেকাতে হারটি সব ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাটও বসবে।

দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে লিফটের সরঞ্জামের আমদানি শুল্ক ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বিদেশি লিফটের দাম অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হবে চলন্ত সিঁড়ি বা এস্কেলেটর আমদানিতে।

স্যান্ডউইচ প্যানেল ভবনে ব্যবহার করা হয় তাপ ও শব্দপ্রতিরোধক হিসেবে। পণ্যটি মূলধনি যন্ত্রপাতি হিসেবে রেয়াতি সুবিধায় মাত্র ১ শতাংশ আমদানি শুল্ক পরিশোধ করে আমদানির সুযোগ রয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, পণ্যটি কোনো মূলধনি যন্ত্রপাতি নয়। দেশে এটি তৈরি হয়। তাই দেশীয় উৎপাদনে উৎসাহিত করতে পণ্যটির আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, বাজেট ঘোষণার দিনই সাধারণত আমদানি শুল্ক ও করসংক্রান্ত প্রস্তাব কার্যকর হয়।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল