ইসাহাক আলী, নাটোর:
প্রবাস ফেরত এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগী নারীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোরের নলডাঙ্গা পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে। মামলার বাদী ওই গৃহবধূর অভিযোগ, মামলা করার পর আসামি নিশান প্রামাণিকের পক্ষ নেন মেয়র মনিরুজ্জামান। মেয়র মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন।
এমন একটি অডিও রেকর্ডিংও গণমাধ্যম কর্মিদের দেন তারা। এরপর থেকে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানান ওই ভুক্তভোগী নারী। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র মনিরুজ্জামান জানান, জনপ্রতিনিধি হিসাবে তিনি বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেছেন মাত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। এ সময় তার স্বামীও তার সাথে উপস্থিত ছিল।
ধর্ষন চেষ্টা মামলার আসামি নিশান প্রামাণিক নলডাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও মেয়র মনিরের সহযোগী ব্রক্ষপুর গ্রামের রহিদুল প্রামাণিকের ছেলে। বর্তমানে তিনি ওই মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই গৃহবধূ লিখিত অভিযোগে জানান, গত রোববার রাতে (৪ জুন) তিনি তাঁর মামা শ্বশুরের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে ছাত্রলীগ নেতা নিশান প্রামাণিক (২৩) তাঁর পথ রোধ করেন এবং জোর করে তাকে মোটরসাইকেলে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। গৃহবধূ রাজি না হলে নিশান তাঁকে জড়িয়ে ধরেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এছাড়া তাকে ধর্ষণের জন্য রাস্তার নিচে নিয়ে গিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় তাঁর চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে নিশান পালিয়ে যান। এরপর গৃহবধূ ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। এ বিষয়ে ওই রাতেই তিনি নিশান প্রামাণিকের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। পুলিশ অভিযুক্ত নিশানকে গ্রেপ্তার করে এবং পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
প্রবাস ফেরত ওই নারীর অভিযোগ, তিনি মামলা করার পর নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান আসামি নিশান প্রামাণিকের পক্ষ নেন। তিনি মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য পরদিন তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন। মামলা তুলে না নেওয়ার কারণে মেয়র তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে হয়রানির চেষ্টা করছেন। এখন তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি পুলিশ সুপারের কাছে নিরাপত্তা চান।
এই অভিযোগের বিষয়ে মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘আমি বাদীকে হুমকি দেইনি। জনপ্রতিনিধি হিসাবে পৌর এলাকার চলমান বিবাদ মীমাংসার অংশ হিসেবে তাকে শুধু আপস করে নেওয়ার অনুরোধ করেছি।’ হুমকি দেওয়ার কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে মেয়র মনির বলেন, ‘শান্তভাবে অনুরোধ করা হুমকি দেওয়া নয়।’
এ ব্যপারে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল কালাম বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে মেয়র মনিরুজ্জামান হুমকি দিচ্ছেন কি না, তা আমাদের জানা নাই। এ রকম ঘটনা ঘটলে বাদী থানায় জিডি করতে পারেন। আমরা আইনানুগ পদক্ষেপ নেব।
সময় জার্নাল/এলআর