নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে টিকটক করতে নিষেধ করায় ও বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসার চাপ সৃষ্টি করায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে ওই শিক্ষককে
সামাজিক ও মানসিকভাবে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে।এছাড়াও ওই শিক্ষকের ব্যবহৃত ফেইসবুক আইডি কৌশলে হ্যাক করে
শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে কটক্ষ মূলক স্ট্যাটাস দিয়ে তাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
হয়রানীর শিকার ওই শিক্ষককের নাম শাহ্ মাজেদ হোসেন রনি। তিনি বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক। এ ঘটনায় হয়রানীর শিকার শিক্ষক কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেছেন।এসব ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা-শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্য
বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছেন কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ওটারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃমমিনুল হক (৫৮) বলেন, দশম শ্রেণীর
বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী আফরিন সুলতানা প্রায়ই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে । এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সহকারী শিক্ষক শাহ্ মাজেদ হোসেন শ্রেনী কক্ষে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তার সহপাঠীরা জানায় সে রাত জেগে টিকটক করে ও সকাল ১০ পর্যন্ত ঘুমে থাকে এবং তার হাতের নখ ও বড় বড় বলে জানায়। ওই সময় শিক্ষক রাত জেগে টিকটক করা 'লেখাপড়ায় অমনযোগী , বিদ্যালয়ে অনিয়মিত উপস্থিতি এবং নখ বড় রাখার কুফল বর্ণনা করে তার হাতের নখ ধরে কাটার নির্দেশ
দেন।এতে ছাত্রীটি শ্রেণী কক্ষে তার সহপাঠীদের সামনে অপমান বোধ করে। বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবকদের ঘটনাটি জানায়। এরপর ছাত্রীটির চাচা মেজবা উদ্দিন রাকিব ওই ঘটনায় গতবছর ১৫ অক্টোবর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পরবর্তী শনিবার সকালে বিদ্যালয় প্রাক্তন ও বর্তমান কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয় সড়কে একটি মানববন্ধন করেন। এছাড়াও চলতি বছর ১৩ জুন ওই শিক্ষকের ভ্যারিফাইড
ফেইসবুক আইডি কে বা কারা হ্যাক করে শিক্ষকের বন্ধু এবং পরিচিতজনদের কাছে বিকাশে টাকা দাবি করে এবং শিক্ষামন্ত্রী
ডা.দীপু মনিকে নিয়ে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব করে স্ট্যাটাস দেয়।এতে ওই শিক্ষক বিব্রত বোধ করেন।এ ঘটনায় তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন।
শিক্ষক শাহ্ মাজেদ হোসেন রনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শ্রেণী কক্ষে ছাত্রীটির অনুপস্থিতির বিষয় ,রাত
জেগে টিকটক করা , পড়াশোনায় মনযোগী হওয়া এবং তার হাতের বড় বড় নখ রাখার কুফল সম্পর্কে বলে তার নখ কাটার নির্দেশ
দেই।ওই সময় শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে তার নখ ধরে তা কেটে ফেলার নির্দেশ দেই। ওই ঘটনার জের ধরে ছাত্রীটির চাচা আমার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয় যা তদন্তে প্রমাণিত হয়নি। তিনি আরোও বলেন একটি চক্র আমাকে বিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত করতে অপচেষ্টা করছেন তবে কে আমি জানি না।গত ১৩ জুন কে বা কারা আমার ফেইসবুক আইডি হ্যাক করে শিক্ষা মন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি পূর্ণ কথা লিখে ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত বোধ করছি।এ ঘটনায় আমি ১৪ জুন কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেছি,এবং জিডিপি তদন্ত দিন অবস্থায় আছে, বর্তমানে আমি বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোঃসাদেকুর রহমান বলেন ,শিক্ষকের ফেইসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডিটি পুলিশ তদন্ত করছে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা সুলতানা বলেন, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি মোবাইল ফোনে আমাকে বিষয়টি অবহিত করার পর ২০ জুন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার জন্য প্রেরণ করি। এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট
একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
এমআই