সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সংকট বেড়েই চলছিল। কতদিনে তা থামবে, সেটি অনিশ্চিত ছিল। এই ভয় থেকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহিবল (আইএমএফ) থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঋণের অঙ্ক আমাদের দুমাসের রেমিট্যান্সের সমান। এটি খুব সহজে পরিশোধ করা সম্ভব। বৃহস্পতিবার দাতা সংস্থা জাইকার নির্বাহী সিনিয়র প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে বলেছে সংস্থাটি। পাশাপাশি প্রকল্পের অগ্রগতিও জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ হয়েছে। বাকি ৫ শতাংশ দ্রুত শেষ হবে। এরপর সেটি চালু করা হবে।
জাইকার অর্থায়নে ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাইকা দিচ্ছে ২ লাখ ১ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয়ের ৭৪ শতাংশের বেশি দিচ্ছে জাইকা। আর ২০২২ সালের জুন নাগাদ বাংলাদেশকে দেওয়া জাইকার মোট ঋণের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন ডলার। এই ঋণের প্রকল্প কাজের অগ্রগতি দেখতে জাইকার নির্বাহী সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ামাদা জুনিছিরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছে। অন্য সদস্যরা হলেন জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি তামহিদ ইছিগুছি, জাইকার প্রধান কার্যালয়ের উপমহাপরিচালক শুনসুকি সাকুদো, প্রিন্সিপাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার সুমন দাস গুপ্ত, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রতিনিধি ওকামতো তাকাহিরো।
দুপুর ২টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাইকার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে জাইকার প্রতিনিধিদল এসেছে। বড় দাতা সংস্থাগুলো এভাবে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে আসে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জাইকার অর্থায়নে বাকি প্রকল্পের কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে বলেছেন। আমরাও আশা করছি পারব। কারণ, আগে প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সমস্যা ছিল, এখন তা নেই। আগে মূল সমস্যা ছিল জমি নিয়ে। জমিসংক্রান্ত জটিলতায় কাজ বিলম্ব হতো। এখন সে সমস্যা নেই।’ জাইকা বাজেট বাস্তবায়নে সহায়তা দেবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ঘাটতি যেখানে আছে, প্রয়োজন হলে সহায়তা নেওয়া হবে। এবার বাজেটের স্লোগান হচ্ছে-‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’। এটি বাস্তবায়নে আইটি খাতসম্পর্কিত প্রকল্প বাস্তবায়নে জাইকার কাছ থেকে সহায়তা নেওয়া হবে।’
অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল-অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বেরিয়ে আসতে আর কতদিন লাগতে পারে? জবাবে মন্ত্রী পালটা প্রশ্নর রেখে বলেন, ‘কোন জায়গায় (অর্থনীতির সূচক) খারাপ দেখছেন? আমেরিকার মতো দেশে তিন ব্যাংক ফেল করছে। এতে বোঝা যায়, পৃথিবীর অর্থনীতি কোনদিকে যাচ্ছে। পশ্চিমা অর্থনীতির বিবেচনায় আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি।’
সাংবাদিকরা জানতে চান-যেহেতু ভালো আছি, তাহলে কি আইএমএফ-এর ঋণ বাতিল করা হবে? জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ যে ঋণ দিয়েছে সেটি আমাদের দুমাসের রেমিট্যান্সের সমান। এটি সহজেই পরিশোধ করা সম্ভব।’
তাহলে কি আমাদের ঋণের প্রয়োজন ছিল-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কতদিনে থামবে, সেটি অনিশ্চিত ছিল। যেভাবে আমাদের সংকট তৈরি হয়, আমদানিতে অনেক ডলার যাচ্ছে, এতে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে বুঝতে পারিনি। এজন্য ঋণ নেওয়া হয়েছে। এখন ভয় কেটে গেছে।’
১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতির বিষয়টি দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার প্রথমদিকে মূল্যস্ফীতি পেয়েছি ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। যে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু, যা করেছি, এখন তার থেকে বাড়েনি।’
তাহলে কি মূল্যস্ফীতি সহনীয় আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি অতিক্রম করতে হলে যাদের কাছে খাবার নেই, তাদের খাবার দিতে হবে। সেটি করছি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। মানুষ কিন্তু না খেয়ে নেই।’ কাঁচামরিচের আকাশছোঁয়া দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি মৌসুমি পণ্য, মৌসুমে উৎপাদন হয়। তাই আগ্রহ নিয়ে সবার মরিচ গাছ লাগানো দরকার।’
এস.এম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল