ঝালকাঠি জেলার নলছিটিতে বিনা অপরাধে নামের সাথে আংশিক মিল থাকায় ডাকাতি মামলার দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামির পরিবের্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন ফিরোজ আলম হাওলাদার জেল খাটছেন বলে তার পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে।
তার মুক্তির দাবিতে শনিবার (৮জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম।
সুরাইয়া বেগম তার লিখিত বক্তব্যে জানান, আমি সুরাইয়া বেগম,স্বামাীঃ মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার, সাং-বৈশাখিয়া, উপজেলাঃ নলছিটি, জেলাঃ ঝালকাঠি সাংবাদিক সম্মেলনে জানাতেছি যে, আমার স্বামী মো. ফিরোজ আলম হাওলাদার ঢাকার আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিয়ন হিসেবে নিয়মিত চাকুরী করে আসছিলেন। কিন্তু গত ০৬.০৩.২০২৩ইং তারিখ দুপুর আনুঃ ১১টার দিকে বরিশাল র্যাব -৮ এর একটি টীম তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে নলছিটি থানায় হস্তান্তর করলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, তাকে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার মামলা নং-২৬, ১৩.০৩.২০০৭ইং সালের একটি ডাকাতি মামলায় ১০বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে আটক করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমি ও আমার স্বজনরা ফরিদপুরে গিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে জানতে পারি উক্ত মামলার ৫নং আসামী হিসেবে জুয়েল, পিতাঃ অজ্ঞাত উল্লেখ আছে। আরও জানতে পারি ইতিপূর্বে উক্ত মামলার ৫নং আসামী জুয়েল ওরফে ফিরোজাল ফরিদপুর কোতোয়ালী থানায় অন্য আরেকটি মামলায় (মামলা নং-১১) ১২.০৬.২০০৩ইং তারিখে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২৮.০৩.২০০৪ইং তারিখ পর্যন্ত ফরিদপুর কারাগারে আটক ছিল। সেখানে আসামীর নাম ফিরোজাল ও পিতার নাম মনু মিয়া, সাং-বৈশাখিয়া, উপজেলাঃ নলছিটি, জেলাঃ ঝালকাঠি উল্লেখ আছে।
আমার স্বামী যদি ডাকাতি মামলার আসামি হতো তাহলে ২০০৩ সনে সেই ডাকাতি মামলার আসামি ফিরোজাল ৯মাস জেল হাজত খেটেছে, তারপর থেকে পলাতক আছে। যদি সে ডাকাতি মামলায় কারাগারে থাকতো তাহলে তার চাকুরি থাকার কথা না। আমার স্বামী সাবলীল ভাবে নিজের বাড়ীতেও অবস্থান করতেন না এবং তিনি যে নিয়মিত তার কর্মস্থলে হাজিরা দিয়েছেন সেটার তথ্য ও প্রমাণাদি আমাদের কাছে আছে।
তিনি আরও বলেন, নামের সাথে সামান্য মিল থাকায় যথেষ্ট যাচাইবাছাই ছাড়াই আমার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। এখন সে অপরাধী না হয়েও জেল খাটছেন আমার পরিবারে চারটি কন্যা সন্তান আছে। তাদের পিতা জেলে থাকায় তারা মানুষিকভাবে ভেঙে পরেছে। আমিও আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তাই প্রকৃত দোষীকে খুজে বের করে আমার স্বামীকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বরিশাল র্যাব-৮ এর মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে গত ০৮.০৩.২৩ইং তারিখ দুপুরে নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের বৈশাখিয়া বাজার থেকে ফিরোজ আলম হাওলাদারকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী হিসেবে নলছিটি থানা মারফত জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মোল্লারহাট তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক মো. মোতালেব হোসেন বলেন, তার গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আদালত থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় লেখা ব্যক্তির তথ্য সঠিক আছে কি না ? আমরা তদন্ত করে দেখেছি প্রেপ্তারি পরোয়ানায় উল্লেখিত তথ্য সঠিক আছে। এখন যদি অন্য কোথাও ভুল থাকে সেটা থাকতে পারে সেটা আমাদের জানা নেই।