আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কোনো দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলা ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ হস্তক্ষেপ বলে মনে করে না যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১০ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অন্য কোনো দেশ যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলে, আমরা সেটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করি না। এ ধরণের আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ এটা আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।
মিলার এমন এক সময়ে এ মন্তব্য করেছেন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দলের মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ও সহকারী সেক্রেটারি ডনাল্ড লু ১১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন।
বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের যে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে, সে প্রেক্ষাপটে এই সফরকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে যেসব তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, সেগুলো নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সরকারের দিক থেকে প্রকাশ্যে ‘অসন্তুষ্টি’ প্রকাশ করা হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় টুইটারে এক বিবৃতির মাধ্যমে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, সেটি কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নগ্ন হস্তক্ষেপের’ শামিল।
সোমবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে আগ্রহ দেখাচ্ছে, সেটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে রাশিয়া, চীন ও ইরান। গত সপ্তাহে রাশিয়া ও চীন এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। পাশাপাশি ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কেও এর সমালোচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ওই সাংবাদিক স্টেট ডিপার্টমেন্টের মন্তব্য জানতে চান।
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অন্যদের কেন আপত্তি থাকবে, সেটি আমি বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে তার প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছেন। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে আমরা উভয়েই স্বচ্ছ নির্বাচনের এ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্তি করি।
মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলের বিপরীতে আরেকটি রাজনৈতিক দলকে তারা সমর্থন করেন না। বরং সত্যিকার গণতান্ত্রিক ধারাকে সমর্থন করে।
উজরা জেয়া এবং ডলান্ড লু’র সফরে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। সেটি পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংবাদ সম্মেলনে। এ সফরে তারা ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, মানব পাচারের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে।
ম্যাথিউ মিলার জানান, এ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে মতপ্রকাশের ও সংগঠনের স্বাধীনতা, সুশাসন ও গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা হবে।
সময় জার্নাল/এলআর