আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বব্যাপী এডিস মশার প্রকোপ বেড়েছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, বিশ্বের অর্ধেক মানুষ মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছর বিশ্বজুড়ে এই রোগটি রেকর্ড করতে যাচ্ছে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের ইউনিট প্রধান রমন ভেলাউধন শুক্রবার (২১ জুলাই) জেনেভায় জাতিসংঘের এক সংবাদ সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেন।
ভেলাউধন বলেন, ডাব্লিউএইচও ২০০০-২০২২ সালের মধ্যে ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আটগুণ বৃদ্ধি রেকর্ড করেছে। এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ থেকে বেড়ে ৪২ লাখ হয়েছে। এ ছাড়াও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কারণ সংস্থাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরো বেশি সঠিক পরিসংখ্যান পেয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সংখ্যা। এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বৃষ্টিবহুল ও উষ্ণ অঞ্চলে অকল্পনীয় দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি।
ডাব্লিউএইচওর গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের ইউনিট প্রধান বলেন, ডেঙ্গু একটি গুরুতর অসুস্থতা, যা সাধারণত মশার কামড়ের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল সংক্রমণ। এটি ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে উপসর্গবিহীন। এর বিরুদ্ধে বর্তমানে বাজারে একমাত্র ভ্যাকসিন হলো সানোফি পাস্তুর ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য প্রায় ২০টি দেশে নিবন্ধিত হয়েছে। ভ্যাকসিনটি শুধুমাত্র সেই সমস্ত লোকদের রক্ষা করে যারা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের তিনটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সংস্করণের (১, ২, ৩ ও ৪) বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা গড়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।তিনি জানান, ভ্যাকসিনটি ডেঙ্গু ১ ও ডেঙ্গু ৩-এর বিরুদ্ধে ৮০ শতাংশ এবং ডেঙ্গু ৪-এর বিরুদ্ধে প্রায় ৫০ শতাংশ কার্যকর।
ডাব্লিউএইচওর এ কর্মকর্তা বলেন, ডেঙ্গুর বিভিন্ন সংস্করণের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের বিভিন্ন কার্যকারিতা একটি চ্যালেঞ্জ। ধারণা করা হয়, ডেঙ্গুতে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে অনেক দেশ আছে, যারা এখনো এ সংক্রান্ত মৃত্যুর খবর সংস্থাটিকে জানায় না।
ঘুমানোর সময়ে মশারির ব্যবহার, বাসাবাড়ি ও অফিস আদালতে পানি জমতে না দেওয়া— এগুলো হয়তো খানিকটা সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এই রোগটি ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো এডিস মশা ও সেটির প্রজনন ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করা।
তাই ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এমআই