সময় জার্নাল ডেস্ক:
দিন দিন ব্যাপকহারে চাহিদা বাড়ছে টক-মিষ্টি ফল লটকনের । এক সময়ের জংলি ফল লটকন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাহাড়ি বাজার ছাড়িয়ে সমতলের বিভিন্ন জেলায় লটকনের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাঙালিদের লটকন ফলটি চাকমা ভাষায় ‘পচিমগুল’, মারমা ভাষায় ‘ক্যানাইজুসি’ ও ত্রিপুরা ভাষায় ‘খুচমাই’ নামে পরিচিত। জুন মাসের মাঝামাঝি পাকতে শুরু করে লটকন।
একই সময়ে বাজারেও আসতে শুরু করে। এটি উচ্চ ফলনশীল একটি কৃষিপণ্য। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে প্রতিটি ডালে থোকায় থোকায় ঝুলতে দেখা যায় ‘লটকন’ ফল। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ টক-মিষ্টি লটকন ছোট-বড় সবার কাছেই অনেক প্রিয়।
কম পরিশ্রম আর কম পুঁজিতে বেশি লাভের সুযোগ থাকায় লটকন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন টক-মিষ্টি ফল লটকন প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বর্ষার ফল লটকনে ছেয়ে গেছে বাজার। টক-মিষ্টি ও রসালো ফলটি খেতে যেমন মুখরোচক, তেমনি এর উপকারিতাও অনেক। ১০০ গ্রাম লটকনে পাওয়া যায় ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি। একই পরিমাণ লটকনে ভিটামিন সি রয়েছে ১৭৮ মিলিগ্রাম, শর্করা ১৩৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৭৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ১৪.০৪ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন বি-২ শূন্য দশমিক ২০ মিলিগ্রাম।
জেনে নিন দেশি এই ফলটি কীভাবে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস লটকন। এছাড়া এতে মেলে থায়ামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও। যাদের মুখে ঘনঘন ঘা হয়, তারা লটকন খান প্রতিদিন।
রসালো লটকন শরীরে পানির সমতা বজায় রাখে।
রুচি বাড়াতে সহায়তা করে টক-মিষ্টি লটকন। পাশাপাশি কমায় বমি ভাব।
প্রতিদিন কয়েকটি লটকন খেলে শরীরের ভিটামিন সি’র চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব।
ত্বকের রুক্ষতা কমায় টক ফলটি। প্রতিরোধ করে ত্বকের ফেটে যাওয়া।
বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় ত্বকে নানা ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। নিয়মিত লটকন খেলে চর্মরোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
খনিজ, ভিটামিন এবং মিনারেলে ভরপুর এ ফলটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী।
কিছু গবেষণা বলছে, মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে উপকারী উপাদানে ঠাসা এই ফল।
বর্ষাকালে বেশ কিছু রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। ফ্লু বা জ্বর, সর্দি, কাশি থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লটকন।
আমাদের শরীরে শক্তির উৎস বাড়ায় লটকন। এতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন সারা দিন সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে।
সময় জার্নাল/এলআর