শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা জেলার ৫ উপজেলার মধ্যে আয়তন ও জনসংখ্যায় বৃহৎ। নানা ইতিহাস আর ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ২৩৭ বর্গ কিলোমিটার কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ মানুষের বাস। বিপুল সংখ্যক এই জনগোষ্ঠীর বিশাল একটি অংশ হচ্ছে শিশু কিশোর। উপজেলাটি শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে থাকলেও এখানে নেই কোন বিনোদনের স্থান। বিনোদন বঞ্চিত শিশুরা প্রাকৃতিক বিনোদন না পাওয়ায় মোবাইল গেমসের দিকে বেশি আসক্ত হচ্ছে। সচ্ছল পরিবারের অভিভাবকেরা সন্তানদের বিনোদনের জন্য বিভাগীয় শহর রংপুর বা অন্য অন্য স্থানে ঘুরতে নিয়ে গেলেও বঞ্চিত হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও গরীব পরিবারের সন্তানরা। ঈদ ও পূজোয় সন্তানদেরকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে এসে পড়তে হচ্ছে বিরম্বনায়।
কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডারে সরকারি জমিতে আশির দশকের একটি শিশু পার্ক নির্মাণ হলেও অযত্ন অবহেলায় এখন গবাদিপশুর চারণভুমিতে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগেই এই পার্কটি এখন মাদক সেবী ও নেশাগ্রস্ত জুয়ারুদের নিরাপদ আশ্রমে পরিণত হয়েছে। যেখানে সন্ধ্যা নামলেই অবলীলায় শুরু হয় মাদক সেবনের আসর।
সরেজমিনে দেখাগেছে, উপজেলা শিশু পার্কটিতে বসেছে বখাটেদের আড্ডা। আর আশপাশে পড়ে আছে ফেন্সিডিলের খালি বোতল। যা দেখে সহজেই অনুমান করা যায় শিশু পার্কটির বেহাল চিত্র। যে কয়েকটি দোলনা আছে সেগুলোতেও মরিচা পড়েছে। পাশের স্লিপারগুলোতে উঠার নেই কোন পরিবেশ। চারদিকে জন্মেছে আগাছা আর খসে পড়ছে প্রাচীর দেয়ালগুলোর পলেস্তার।
বেশ কয়েক বছর ধরে শিশুপার্কটির বেহালদশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরালো সমালোচনার সৃষ্টি হলে উপজেলা প্রশাসন থেকে জানায় পার্কটির সংস্কারের কথা।
স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলার শিশুদের মেধা বিকাশে পার্কটিতে নতুন নতুন রাইডের সংযোজন করে সঠিক পরিচর্যার কথা। পাশাপাশি বখাটেদের আড্ডা বন্ধ করাসহ এলাকাবাসী দাবি আধুনিকায়নের।
বিভিন্ন সময় শিশুপার্কটি নিয়ে কাজ করা স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বলছেন, উপজেলার একমাত্র বিনোদনের স্থান হলেও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে অলস পড়ে আছে জায়গাটি। পরিষদ থেকে আধুনিকায়ন করা সম্ভব না হলে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান দিয়ে শিশুবান্ধব পার্কে পরিণতের দাবি করছেন।
উপজেলায় বাচ্চাদের খেলার জায়গার সংকুলানের কথা স্বীকার করে ইউএনও জহির ইমাম বলেন, প্রতি বছরই বাজেট দেয়া হয়, কাজও হয়। তবে এটার সঠিক রক্ষনাবেক্ষন না হওয়ায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। নতুন বছরে বেশি বরাদ্দ দিয়ে শিশু পার্কের যৌলস ফেরানোর কথাও বলেন তিনি।
শিশুপার্কটিকে আধুনিকায়ন করে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শহিদ শেখ রাসেল পার্ক নামকরণের দাবিও করছেন কেউ কেউ।
এমআই