আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসকদের জেনেরিক ওষুধের নাম লিখতে হবে। ওই নিয়ম লঙ্ঘন করলে চিকিৎসকদের কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। নয়া নির্দেশিকা জারি করে এমনই কঠোর বিধানের কথা জানিয়েছে ভারতের জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন)।
সেইসাথে কমিশনের নয়া নির্দেশিকর ব্র্যান্ডেড জেনেরিক ওষুধ নাম না লেখারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এই নিয়মের ফলে রোগীরা অনেকটা সস্তায় ওষুধ কিনতে পারবেন বলে বিশেষজ্ঞদের মতে। কারণ কোনো ব্র্যান্ডের ওষুধের তুলনায় জেনেরিক ওষুধের দাম ৩০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কম হয়ে থাকে। অনেকটা সাশ্রয় হবে তাদের।
এমনিতে রোগীদের প্রেসক্রিপশনে শুধুমাত্র জেনেরিক ওষুধের নাম লিখতে হয় চিকিৎসকদের। কিন্তু ২০০২ সালে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, তাতে কোনো শাস্তির বিধান ছিল না। এবার নয়া নিয়মে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন ঠিক ওই বিষয়টা যুক্ত করেছে। চিকিৎসদের পেশাদারি আচরণ নিয়ে ২ আগস্ট কমিশনের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যের কারণে ভারতে মানুষের যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, সেটার একটা বড় অংশ ওষুধ কিনতে বের হয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের জেনেরিক ওষুধের নাম লেখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘ব্র্যান্ডেড ওষুধের তুলনায় জেনেরিক ওষুধের দাম ৩০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ সস্তা হয়। তাই (চিকিৎসকরা) জেনেরিক ওষুধ প্রেসস্ক্রাইব করলে স্বাস্থ্যসেবা খাতে খরচ অনেকটা কমে যেতে পারে এবং আরো ভালো চিকিৎসা পাওয়ার সুযোগ বাড়াবে।’ সেইসাথে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, অযথা ওষুধ না দেয়া এবং অকারণে স্রেফ নির্দিষ্ট মাত্রার সংমিশ্রণের ওষুধ যেন না দেন চিকিৎসকরা। যুক্তিযুক্তভাবে সবকিছু বিবেচনা করে ওষুধ দিতে হবে তাঁদের।
আর নিয়ম লঙ্ঘন হলে চিকিৎসকদের প্রাথমিকভাবে সতর্কবার্তা জারি করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, নিয়ম লঙ্ঘনকারী চিকিৎসদের কোনও ওয়ার্কশপে যোগ দিতে হতে পারে। বারবার নিয়ম লঙ্ঘন করলে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য চিকিৎসকদের লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, পেটেন্ট বা স্বত্ব নেয়া ওষুধকে ব্র্যান্ডেড জেনেরিক ওষুধ বলা হয়। এটি নির্দিষ্ট ওষুধ সংস্থা প্রস্তুত করে এবং ব্র্যান্ডের নামে ওই ওষুধ বিক্রি করা হয়। আর যে ওষুধের পেটেন্ট থাকে, তা ১৫ বছর পরে জেনেরিক ওষুধের তকমা পেয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে রাসায়নিক সংমিশ্রণ না পাল্টে ওই ওষুধ তৈরি করতে পারে অন্য যেকোনো সংস্থা।
সময় জার্নাল/এলআর