নিজস্ব প্রতিনিধি:
এক সময় কেবল অযত্নে-অবহেলায় বেল গাছ বেড়ে উঠতো। এখন এ গাছের নিয়মিত পরিচর্যা করছেন চাষিরা। ওষুধি ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কদবেলের কদর ছোট-বড় সবার কাছেই সমান। কদবেলের চাহিদা থাকায় অর্থকরি ফসল হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু হয়েছে।
আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ উপযোগী হওয়ায় সারাদেশের তুলনায় ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় বেলগাছ বেশি। একটি বড় বেলগাছের বেল বিক্রি করে বছরে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করা যায় বলে বেলগাছ রোপণের দিকে ঝুকছেন অনেকেই। অবহেলায়-অযত্নে বেড়ে উঠা কদবেল গাছ অনেক পরিবারের কাছে এখন স্বপ্ন।
এদুই উপজেলার সবগুলো গ্রামেই রয়েছে কদবেলের গাছ। এখানকার একটি বেল গাছে অনেক বেল ধরে থাকে। সারাদেশে কদবেলের চাহিদা থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোহার-নবাবগঞ্জ থেকে বেল সংগ্রহ করে সারাদেশে সরবরাহ করে থাকেন। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বেল।
আগস্ট থেকে থেকে অক্টোম্বর এই তিন মাস গাছ থেকে পাকা ও আধাপাকা বেল পেড়ে বাজারজাত করা হয়। নবাবগঞ্জ উপজেলার মাঝিরকান্দা, সাদাপুর ও হয়রতপুর ও দোহার উপজেলার পালামগঞ্জ, শিলাকোঠা, গাজীকান্দা এলাকার লোকজনই দীর্ঘদিন ধরে বেলব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত।
কথা হয় পালামগঞ্জ ফুলতলার বেল ব্যবসায়ী মো: আতোয়ারের সাথে। তিনি জানান, বংশপরম্পরায় এ পেশার সাথে তিনি সম্পৃক্ত। এ বছর তিনি ২৫টির মতো বেলগাছ কিনেছেন। অধিকাংশ বেল বিক্রি হয়ে গেছে। প্রতি বস্তা বেল ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার হয়রতপুর এলাকার হামেস মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর বেলের ফলন ভালো হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় পাইকারি বাজারে দাম পড়ে যাওয়ার এ বছর বেল বিক্রি করে আয় হচ্ছে না। কদবেলের পাইকারি বাজার যাত্রাবাড়িতে।
বেল বিক্রি করতে প্রতিদিন ভোর বেলায় পিকআপভ্যানে করে বেল নিয়ে যাত্রাবাড়িতে যান ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে বেল পাড়ার পর এক সপ্তাহ রোদে শুকিয়ে তখন বস্তাবন্দী করে বিক্রির উদ্দেশে নিয়ে যান। অন্যান্য ফলে ক্যামিকেল মেশানো হলেও এখনো বিষমুক্ত ফল বেল।
দোহার নবাবগঞ্জের বেল সুস্বাদু হওয়ায় রাজধানীর পাইকারি বাজারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে এই বেল। টক-মিষ্টি স্বাদের ফলটি উচ্চ রক্তচাপ রোধে ও রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।
সময় জার্নাল/এলআর