মাহমুদুল হাসান, কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন মূল ফটকের রড চুরি হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ মে ক্যাম্পাসের ভিতর থেকে প্রায় এক টন ওজনের এ রডগুলো চুরি হয়ে যায় বলে জানা গেছে।
তবে এর প্রায় এক সপ্তাহ আগেও একই জায়গা থেকে রড খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ফটক নির্মাণের সাথে জড়িত মডার্ন কনস্ট্রাকশন এন্ড আর্কিটেকচার লিমিটেড।
এদিকে এ রড চুরির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের।
রড চুরির অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম সুমন বলেন, রড চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও প্রায় ১৪ দিন আগে এখান থেকে প্রায় এক টন রড হারিয়ে গিয়েছিল। তবে তখন কারিগরি ক্রুটি সহ অন্য কোনোভাবে রড হারিয়ে যেতে পারে ভেবে আমরা অভিযোগ করি নাই। বরং নিজেরাই রড কিনে এনে তখন কাজ শেষ করি৷ কিন্তু আবারও একই ঘটনা ঘটলো গত ৯ তারিখে।
এ বিষয়েএ প্রকল্পটির দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ৬ তারিখ রাতে ২১ বান্ডেল রড তালা দিয়ে বাড়ি চলে আসি৷ তখন সুপারভাইজার সুমনও সাথে ছিলেন। কিন্তু ৯ তারিখ আমি জানতে পারি, শেকল কেটে সেখান থেকে ৭ বান্ডেল রড চুরি করে নিয়ে গেছে৷ যা পরিমাণে প্রায় এক টনের বেশি। পরবর্তী সময়ে আমাদের মালিকের পরামর্শে একই দিনে সদর দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তবে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ছাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, মডার্ন কনস্ট্রাকশন এন্ড আর্কিটেকচার লিমিটেডের পক্ষ থেকে যারা এগুলোর দেখভাল করছিলো, উনি এখানে জিনিসপত্র রেখে চলে যান৷ এখানে কি পরিমাণ, কি কি জিনিস ছিলো সে বিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানান নাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা সবসময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের আনাগোনা দেখেছি। তাই আলাদাভাবে তাদেরকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করি নাই৷
প্রক্টর ড.কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন তদন্ত কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, যেটা হয়েছে এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তদন্ত কমিটি হয়েছে। এখন যেহেতু লকডাউন, ইদের ছুটি তাই সবকিছু মিলিয়ে কাজ এখনো কিছু হয়নি। তবে, তদন্ত কমিটি কাজ করবে। কাজ করে যত দ্রুত সম্ভব রিপোর্ট জমা দিবে।
এ রড চুরির ঘটনায় ১১ মে করা প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীনকে আহ্বায়ক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন মজুমদারকে সদস্য সচিব করে করা ৫ সদস্যের কমিটিতে আরো আছেন সহকারী প্রক্টর মো. মোকাদ্দেস-উল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম এবং কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. আবু তাহের।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, আমরা ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত আছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ১১ মে প্রক্টর ড.কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাদের দ্রুতই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। শীঘ্রই এ ঘটনার সুরাহা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। এ প্রকল্পের অধীনে 'মডার্ন কনস্ট্রাকশন এন্ড আর্কিটেকচার লিমিটেড' কোম্পানির দ্বারা গেটটির নির্মাণকাজ করা হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এমআই