এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) বহুল আলোচিত পর্দা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এছাড়াও মামলার অপর তিন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে চার্জশীটটি ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দাখিল করা হয়েছে।
এদের মধ্যে পাঁচজনই চিকিৎসক। ৯ জুলাই দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হকের (তদন্ত) স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর পর্দা ও সরঞ্জামাদি কেনাকাটায় ১০ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনায় মামলা করে দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী মামলাটি করেছিলেন।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন, মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সি ফররুখ আহমেদ, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সি সাজ্জাদ হোসেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডা. বরুণ কান্তি বিশ্বাস, সাবেক সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু বিভাগ) ডা. এনামুল হক, সাবেক অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. শেখ আবদুল ফাত্তাহ, সাবেক সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারি) ডা. মো. মিজানুর রহমান, সাবেক আরএমও ডা. মো. শফিক উল্লাহ, একই হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার ওমর ফারুক, স্টোরকিপার আবদুর রাজ্জাক, ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার আলমগীর ফকির, ফরিদপুর গণপূর্ত উপবিভাগের সাবেক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আবদুস সাত্তার, রাজধানীর মহাখালীর নিমিউ অ্যান্ড টিসির সহকারী প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং) মিয়া মোর্তজা হোসাইন এবং মেসার্স আলী ট্রেডার্সের মালিক আলমগীর কবির।
এই মামলার চার্জশীট থেকে যাদের অব্যহতি দেওয়া হলো তারা হলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (দন্ত বিভাগ) ডা. গণপতি বিশ্বাস শুভ, ফমেক হাসপাতালের সাবেক জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. মীনাক্ষী চাকমা ও ফমেক হাসপাতালের সাবেক প্যাথলজিস্ট ডা. এ এইচ এম নুরুল ইসলামকে মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়, উক্ত তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
ফরিদপুর দুদকের সমন্বিত কাযালয়ের উপ-পরিচালক মো. রেজাউল করিম জানান, দুদকের প্রধান কাযালয়ের আদেশ পাওয়ার পরেই আমরা ১৪জন আসামীর বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৪০৯/৫১১/১০৯ তৎসহ ১৯৪৭সনের দুনীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশীট নং-৩ বিচারার্থে বিজ্ঞ ফরিদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দাখিল করেছি। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় পরবর্তী তারিখ ধায্য রয়েছে।
ফরিদপুর দুদক কার্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, তাদের বিরুদ্ধে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজশে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং অবৈধভাবে প্রাক্কলন ব্যতীত উচ্চ মূল্যে হাসপাতালে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের মাধ্যমে সরকারের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য , ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) কেনাকাটায় অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। পরবর্তীতে অভিযোগটির অনুসন্ধান করে মামলা করে দুদক।
এমআই