বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

মধুমতীতে বাড়ছে ভাঙন, আতঙ্কে তিনশ পরিবার

বুধবার, আগস্ট ২৩, ২০২৩
মধুমতীতে বাড়ছে ভাঙন, আতঙ্কে তিনশ পরিবার

এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদীতে বেড়েছে ভাঙ্গন। চোখের নিমিষেই  নদীর অতল গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে মাথা গোঁজার একমাত্র শেষ সম্বল। কেউ কেউ পৈত্রিক  ভিটে-বাড়ি ছেড়ে বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। নদী তীরবর্তী মানুষের নির্ঘুম রাত কাটছে ভাঙন আতঙ্কে। 

সরেজমিনে গেলে জানা যায় , মধুমতি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার  সাথে পাল্লা দিয়ে  বেড়েছে ভাঙ্গন।  আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাঁচুড়িয়া ও উত্তর চরনারানদিয়া গ্রামে মধুমতি নদী তীরবর্তী প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র আকারে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। মধুমতি নদীর ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে কমপক্ষে সাড়ে তিনশো পরিবার।

এছাড়াও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে পাঁচুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঁশতলা বাজার, একাধিক পাকা সড়ক, দুইটি মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ ও কবরস্থানসহ শত শত বিঘা ফসলি-জমি,গাছ-পালাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।



সরেজমিনে দেখা যায়,গত কয়েক দিনে মধুমতিতে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার জায়গা। এতে কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ টি বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে হয়েছে। অনেকেই সব হারিয়ে বসবাস করছে খোলা  আকাশের নিচে। অনেকে আবার শেষ সম্বল ঘরবাড়ি, গাছপালা নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাধ্য । কেউ কেউ বাড়ির চাল খুলে অন্য জায়গায় রাখলেও খাম ও বেড়া লাগিয়ে রাখছে, যদি থামে নদীর ভাঙন। ভাঙন ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে বিভিন্ন পয়েন্টে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে সেগুলো প্রয়োজনের চেয়ে একেবারেই অপ্রতুল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 

উত্তর চরনারানদিয়ার স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, কয়েকদিন আগে নদীতে আমার বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর কিছুই নেই। একেবারে সর্বশান্ত । আমার মায়ের বয়স ৯০ বছরের মতো। বৃদ্ধা মাকে নিয়ে নদী তীরে অন্যের জমিতে একটি ছাপড়া তুলে কোনমতে বেচে আছি। এখন সেই ছাপড়া ঘরও যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হওয়ার মতো অবস্থা। এরপর যে কোথায় যাবো সে চিন্তায় থাকি। এভাবে চলতে থাকলে জীবন অনেকটা বরবাদ হয়ে যাবার উপক্রম। 

পাচুড়িয়া এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা  বলেন, সারাদিন নদীর তীরে বসে থাকি।  কখন সবকিছু ভেঙ্গে নিয়ে যায়। রাতেও ঘুম আসে না। কোনমতে ঘুম আসলেও ঘুমের মধ্যে হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়ি, এই বুঝি আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে চরনারানদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইয়াছিন মোল্লা জানান, পানি বাড়ার সাথে ভাঙ্গনও বেড়েছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে পাউবো জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। প্রয়োজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থা গ্রহণের যাতে ভাঙ্গন রোধ করা যায়।

এ ব্যাপারে  ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সন্তোষ কর্মকার জানান, মধুমতি নদী ভাঙন এলাকায় বরাদ্দ অনুযায়ী আপদকালীন জিওব্যাগ ফেলানো হচ্ছে। আগামী অক্টোবর মাস থেকে নদী ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল