পিরোজপুরে নেছারাবাদ উপজেলার মাহমুদকাঠিতে সুপারি গাছের শুকনো খোল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ওয়ানটাইম প্লেট তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আকরাম হোসেন উজ্জ্বল। তার এই কার্যক্রম নিয়ে লিখেছেন মোঃ শামীম হোসাইন।
সুপারির জন্য বিখ্যাত স্বরূপকাঠি। গোটা উপজেলায় সারি সারি সুপারি গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে ঝরে পড়া খোল বা বাইল বেশিরভাগই বাগানে পড়ে থাকে। মাঝেমধ্যে বাড়ির বেড়ায় ব্যবহার করা হয়। কেউ কেউ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করেন। এসব খোল বা বাইল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের আগে গোড়ার অংশ কেটে তা এক টাকায় বিক্রি করা হয় উজ্জ্বলের কাছে। হ্যান্ডমাইক নিয়ে উজ্জ্বল এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন সুপারির খোল বিক্রি করার জন্য। তাঁর কারখানায় তৈরি সামগ্রী এখন চালান হচ্ছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে।
জানা গেছে, উজ্জ্বল তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে এ কাজে উৎসাহিত হন। তিনি খুলনা থেকে মেশিন সংগ্রহ করে ওয়ানটাইম প্লেট তৈরির কারখানা চালু করেন। গত জানুয়ারিতে স্বরূপকাঠির কুড়িয়ানা সড়কের পাশে মাহমুদকাঠি হাসপাতালের কাছেই গড়ে তোলেন ‘এ আর ন্যাচালার প্লেট’ নামে ছোট্ট একটি কারখানা। তাঁর কারখানায় এখন ৮ জন কর্মচারী রয়েছেন। স্থানীয় লোকজন তাঁর কারখানায় এসে সুপারির খোল বিক্রি করেন। সুপারির খোল সংগ্রহের জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগ দেওয়া আছে তাঁর। তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ঝরে যাওয়া সুপারি খোলের গোড়া কেটে প্রতিপিচ এক টাকা দরে কেনেন।
উজ্জ্বল জানান, আমি মনে করি পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের এলাকায় এ রকম আরও কারখানা গড়ে গড়ে তোলা দরকার। এ কাজে বেকার যুবকরার এগিয়ে এলে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কোনো রকম রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই ঝরে পড়া সুপারির খোল থেকে এসব তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো শতভাগ পরিবেশবান্ধব। এই প্লেট ব্যবহারের পর ফেলে দিলে পচে যাবে। তিনি আশা করেন, এক সময় প্লাষ্টিকের বিকল্প হিসেবে মানুষ এই পণ্য ব্যাপকহারে ব্যবহার করবে এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
স্বরূপকাঠি ইউএনও মাহাবুব উল্লাহ মজুমদার জানান, এ উপজেলায় এই প্রথম সুপারির খোল দিয়ে ওয়ানটাইম পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করায় তাঁকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ খাতে এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং আয়ের নতুন একটা পথ সৃষ্টি হবে। উজ্জ্বলের এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় ভালো উদ্যোক্তাদের সর্বদিক থেকে সহযোগিতা করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে আর্থিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। তাঁর কারখানায় উৎপাদিত পণ্য ব্যবহার করায় পরিবেশ দূষণ অনেক কমে আসবে। তাই
জনসাধারণকে এগুলো ব্যবহার করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এমআই