সর্বশেষ সংবাদ
মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা :
প্রচলিত একটা বয়ান আছে, হামাস আসলে এলোপাথাড়ি মিসাইল মেরে ইসরায়েলের পারপাসই সার্ভ করে। হামাস ইনফ্যাক্ট ইসরায়েলেরই সৃষ্টি।
অনুমান নির্ভর কন্সপিরেসি থিওরির বাইরে এই বয়ানের পক্ষে একটা ভালো রেফারেন্স হচ্ছে মেহদি হাসানের ব্লোব্যাক সিরিজের একটা এপিসোড, যেখানে মেহদি হাসান আমেরিকান এবং ইসরায়েলি মিলিটারি পার্সোনালদের বক্তব্য এবং ডকুমেন্ট থেকেই কোট করে দেখিয়েছেন, হামাসের জন্মের সময় ইসরায়েল আসলেই গোপনে দলটিকে আর্থিক সহায়তা করেছিল।
ইসরায়েলের লক্ষ্য ছিল, সে সময় তুমুল জনপ্রিয় পিএলও এবং ফাতাহর বিপরীতে এমন একটা "জঙ্গি" দলের উত্থানে সাহায্য করা, যাদের নির্বিচার আক্রমণের কারণে বিশ্ব জনমত ফিলিস্তিনিের বিপক্ষে চলে যাবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, হামাসের জন্মের শুরুর দিকে ইসরায়েল তাদেরকে গোপনে ফান্ডিং করলেই কি তারা ইসরায়েলের এজেন্ট বা ইসরায়েলের পারপাস সার্ভকারী হয়ে যায়? অথবা হামাসের কারণে কি এখনও ইসরায়েল লাভবান হচ্ছে?
উত্তরটা হচ্ছে, না। হামাসকে যে ইসরায়েল আসলেই পরোক্ষভাবে টাকা দিয়েছে, প্রমোট করেছে, সেটা স্বীকার করে নিলেও হামাস ইসরায়েলের এজেন্ট হয়ে যায় না।
ব্যাপারটা হচ্ছে, হামাস এবং ফাতাহর আদর্শ ভিন্ন, লড়াইয়ের পদ্ধতি ভিন্ন। কিন্তু দুটো দলই দেশপ্রেমিক, দুটো দলই অনেস্ট, অ্যাটলিস্ট কয়েক দশক আগ পর্যন্ত সেরকম ছিল।
কিন্তু সে সময় ফাতাহ জনপ্রিয় ছিল, সেজন্য ইসরায়েল বিভাজন সৃষ্টির জন্য হামাসকে প্রমোট করেছে। এখন কিন্তু ঘটছে উল্টাটা। এখন হামাসই ফিলিস্তিনের জন্য লড়ছে, ফাতাহর জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে। এবং সেজন্য ইসরায়েল এখন ফাতাহকে টাকা দিচ্ছে। প্রকাশ্যেই। তো এখন কি তাহলে ফাতাহকে ইসরায়েলের এজেন্ট বলব?
ইসরায়েল ফাতাহকে ডিলেজিটিমাইট করার জন্য হামাসকে ফান্ডিং করেছে, সেটা ইসরায়েলের দূরদর্শিতা। কিন্তু সোভিয়েতের পতনের পর ফাতাহ এমনিতেই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ত। ফিলিস্তিনিদের ভাগ্য ভালো সে সময় হামাসের আবির্ভাব ঘটেছে। না হলে তাদের পক্ষে লড়াই করার আর কেউ থাকত না।
এখন গাজা অবরুদ্ধ হলেও অ্যাটলিস্ট ফিলিস্তিনিরা সেই অবরুদ্ধ ওপেন প্রিজনের ভেতরে নিজেদের মতো করে চলতে পারে। হামাস না থাকলে গাজাতেও প্রতি ব্লকে ব্লকে ইসরায়েলি সৈন্য থাকতো। ঘর থেকে মসজিদে যেতে হলেও ইসরায়েলের অনুমতি নিয়ে যেতে হতো।
হামাসের কারণেই ইসরায়েল গাজায় পরাজিত হয়ে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছে। এবং হামাসের মিসাইলের ভয় আছে বলেই পশ্চিম তীরে তাদের উচ্ছেদ কার্যক্রম কিছুটা স্লো আছে।
মেহদি হাসানের এই এপিসোডটা আসলে পশ্চিমা ভিউয়ারদের জন্য - দেখ, ভুল পদ্ধতিতে এগোলে তার ব্লোব্যাক কীরকম হয়। কিন্তু এই যে "ব্লোব্যাক", এর অর্থই তো তাদের ফান্ডিং করা দল শেষে তাদের বিরুদ্ধেই গেছে, তাদের "এজেন্ট" হিসেবে কাজ করছে না।
এবং বাইদ্যওয়ে, ফান্ডিং মানে কিন্তু পরোক্ষ ফান্ডিং। এমন না যে ইসরায়েল শেখ ইয়াসিনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়েছে। বা এমন না যে শেখ ইয়াসিন জেনে শুনে তাদের হাত থেকে টাকা নিয়েছে। এটা খুবই সম্ভব যে, ইসরায়েল কয়েক হাত ঘুরিয়ে টাকা দিয়েছে, আর হামাসের টাকা দরকার ছিল বলে তারা আননোন ডোনেশন থেকে সেই টাকা নিয়েছে। শেখ ইয়াসিনকে বা তার উত্তরসূরীদেরকে ইসরায়েলের পারপাস সার্ভকারী বলতে আরো অনেক স্ট্রং এভিডেন্স দরকার।
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল