রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

খোলা বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে ডলারের দাম

বৃহস্পতিবার, আগস্ট ৩১, ২০২৩
খোলা বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে ডলারের দাম

সময় জার্নাল ডেস্ক:

লাফিয়ে বাড়ছে ডলারের দাম। বিশেষ করে খোলা বাজারে প্রতি দিনই ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বুধবার খোলা বাজার থেকে প্রতি ডলার পেতে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হয়েছে গ্রাহকদের।

যেখানে আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের জন্য বিক্রি হয় ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা। ব্যাংক থেকে খোলা বাজারে ডলারের এ পার্থক্যকে অস্বাভাবিক মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

বিভিন্ন অনিয়মের কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বুধবার ৭টি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে। আরও ১০টির কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে ডলার কেনা-বেচার কারণে সাত মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আলোচ্য সাতটি মানিচেঞ্জার হলো, ইয়র্ক মানি এক্সচেঞ্জ, জামান মানি চেঞ্জিং হাউজ, জেনি মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, মার্সি মানি এক্সচেঞ্জ কো: লিমিটেড, বেঙ্গল মানি এক্সচেঞ্জ ও জেবি মানি এক্সচেঞ্জার লিমিটেড।

পাশাপাশি দশটি মানি চেঞ্জারের ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে লাইসেন্সের শর্ত ভেঙে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের তথ্য নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকে না পাঠানো, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন মানি চেঞ্জার মনিটরিং সিস্টেমে ভুল তথ্য প্রদান এবং মানি চেঞ্জার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বরাবর ইস্যুকৃত নির্দেশনা লঙ্ঘন করে নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি মূল্যে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়। 

আলোচ্য ১০টি মানি চেঞ্জারের ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, নিউ প্রাইম মানি চেঞ্জার লিমিটেড, উত্তরা মানি চেঞ্জার, মিসা মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, যমুনা মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, পাইওনিয়ার মানি এক্সচেঞ্জ, বুড়িগঙ্গা মানি এক্সচেঞ্জ প্রা: লিমিটেড, স্কাফ মানিচেঞ্জার, হযরত খাজা বাবা মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র লি:, গেন্ডারী মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড ও মাতৃক মানি চেঞ্জার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডলারের সরবরাহ সঙ্কটে কিছু ব্যাংক সীমার অতিরিক্ত মুদ্রা জমিয়ে রেখে অতিরিক্ত মুনাফা শুরু করে। সুযোগ থাকলেও তা বাজারে না ছেড়ে কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানো হয়। আবার কয়েকটি ব্যাংক ডলার সংরক্ষণের তথ্যও গোপন করে। 

এর আগে ২০২২ সালের আগস্টে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দর বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়ায় ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে পাঁচটি দেশী এবং একটি বিদেশী ব্যাংক ছিল। 

পরবর্তীতে ডলারের বাজার অস্থিতিশীল করে অতিরিক্ত মুনাফা করার অভিযোগে সরিয়ে দেয়া ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে আগের পদে ফেরার সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে আবারও এসব ব্যাংকগুলোর মধ্যে অনেকে ডলার কারসাজিতে জড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহ থেকে খোলা বাজারে ডলারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বর্তমানে আন্তঃব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারে ডলারের দামের ব্যবধান প্রায় ৮ টাকা। এই বড় ব্যবধানের কারণে হুন্ডিতে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন প্রবাসীরা। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে যাদের মাসিক আয় কম এবং যারা অবৈধভাবে প্রবাসে আছেন, তারা হুন্ডিতেই টাকা পাঠাতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। এতে করে কমে যাচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্স।

গত দেড় বছরে রেকর্ডসংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও প্রবাসী আয়ের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মূল কারণ হলো প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে হুন্ডির ব্যবহার বেড়ে গেছে। ব্যাংকগুলো যে দরে নগদ ডলার বিক্রি করবে, সেটির সঙ্গে সর্বোচ্চ ২ টাকা যোগ করে ডলার বিক্রি করতে পারবে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল সোনালী ব্যাংক নগদ ডলার বিক্রি করেছে সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায়। 

এর সঙ্গে আড়াই টাকা যোগ করে ক্রেতাদের থেকে মানি চেঞ্জাররা সর্বোচ্চ নিতে পারবে ১১১ টাকা ৫০ পয়সা। আর মানি চেঞ্জাররা এই রেটেই ডলার বিক্রি করছে বলে নিজস্ব সাইনবোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তথ্য পাঠিয়েছে। কিন্তু গতকাল কয়েকটি মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এই রেটে তারা ডলার বিক্রি করছেন না। গতকাল বেশির ভাগ মানি চেঞ্জারে প্রতি ডলার বিক্রি হয় সর্বোচ্চ ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে ব্যাংকের সঙ্গে খোলা বাজারে ডলারের দামের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ টাকায়। 

মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত জুলাই ও চলতি আগস্টে ডলার কেনার ব্যাপক চাহিদা। এ সময়ে অনেকে বিদেশ ভ্রমণে যান। আবার শিক্ষার উদ্দেশ্যে অনেকে বিদেশে গেছেন। ফলে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ সেভাবে বাড়েনি।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল