রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত বেড়ে ৪৩

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩
কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত বেড়ে ৪৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিক্ষোভের সময় কঙ্গোর গোমায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কোর সদর দপ্তরের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ছবিটি ২০২২ সালের ২৫ জুলাই তোলা

মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। মূলত জাতিসংঘবিরোধী হিংসাত্মক এই বিক্ষোভে দেশটির সেনাবাহিনী কঠোরভাবে দমন করা শুরু করলে বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

এছাড়া ক্র্যাকডাউনে আরও ৫৬ জন আহত হয়েছেন। আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে বলে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার পূর্ব কঙ্গোলিজ শহর গোমায় জাতিসংঘ বিরোধী হিংসাত্মক বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর কঠোর দমনপীড়নে ৪৩ জন নিহত এবং আরও ৫৬ জন আহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোলিজ সৈন্যরা ক্র্যাকডাউন শুরু করে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ও অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত এই বিক্ষোভ জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

রয়টার্স অবশ্য সেই ফুটেজটি যাচাই করতে পারেনি।

কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনটি মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এই মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই সহিংসতার কারণে বুধবার দেশটির ওই শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

রয়টার্স বলছে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিরক্ষীরা বহু বছরের মিলিশিয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজকরা অবশ্য এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী ও পুরুষরা লাঠি ও পাথর দিয়ে একজন পুলিশকে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন।


এর আগে কঙ্গোর কর্তৃপক্ষ বলেছিল, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলেছে, বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। এছাড়া আরও ১৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কঙ্গোর সৈন্যরা একটি লরিতে বহু মৃতদেহ স্তূপাকার করে রাখছে এবং গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবশ্য এই ফুটেজটিও যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

গোমায় ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের স্থানীয় শাখার প্রধান অ্যান-সিলভি লিন্ডার বলেছেন, প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর তার ক্লিনিকে গুরুতর ছুরিকাঘাত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে বহু আহত মানুষ এসেছেন। তিনি বলেন, ‘ক্লিনিকে পৌঁছানোর সময়ই অনেকে মৃত অবস্থায় ছিল।’

এদিকে এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলেও জানিয়েছে। এছাড়া সহিংসতার ঘটনায় তাৎক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করতে এবং আটককৃতদের সাথে মানবিক আচরণ করতে ও তাদের অধিকারকে সম্মান করতেও আহ্বান জানিয়েছে মনুস্কো।

এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো তথা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে গোমা এবং বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।

রয়টার্স বলছে, বছরের পর বছর ধরে চলা বিদ্রোহী সংঘাত এবং একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে মানবিক সংকট ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, নর্থ কিভু প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলোতে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল