মোঃ আখতারুজ্জামান :
ইদানিং সরকারী অফিসগুলোতে সাংবাদিকদের দৌরাত্ব বেড়ে গেছে। কোন কোন অফিস আবার মাসোহারা দিয়ে সাংবাদিক রাখে। সাংবাদিকদের জন্য ভাগ রাখতে হয়। এসব শুনি আর কি!
তবে আমার মনে হয় সাংবাদিকতা একটি কঠিন পেশা। অনেক কিছু জানতে হয় কঠোর পরিশ্রম করতে হয় রিস্ক নিয়ে কাজ করতে হয়। যুদ্ধের সময় তাদেরকে মারাও পড়তে হয়। তাদেরকে সমাজের সম্মান করা দরকার। আমরাও করি।
কিন্তু যখন দেখি কিছু কিছু লোক হঠাৎ করে ক্যামেরা হাতে নিয়ে সাংবাদিক হয়ে যান তখন অবাক হতে হয়। একজনকে তার ঠিকানা লিখতে বলায় পালিয়ে গেছে, পরে অপর এক সাংবাদিক জানায় সে লিখতে পারে না।
আমি এক জেলায় দেখেছি নদীর এক ফুট ভাংগা ছবি পত্রিকায় ছাপিয়ে ঠিকাদারের হাতে দিয়ে ইন্জিনিয়ারকে দিয়ে চিঠি লিখিয়ে বড়ো এলোটমেন্ট নিয়ে সবাই ভাগাভাগি করেছে। রংগিন হরফে ছাপা হয়েছিল মাইলের পর মাইল নদীগর্ভে বিলীনঃ দেখার কেউ নাই।
গত ২৫ বছর দেখে আসছি দপ্তরে যেকোন অনুষ্ঠান করলে তাদের জন্য খাবার দিতেই হবে, টাকা দিতে হবে, না দিলে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা করবে। কেন? আবার মাঝে মাঝে দেখা যায় বিভিন্ন কর্মকর্তা সে সচিব হোক বা উপসচিব হোক তাকে কোন এক পুচকে সাংবাদিক নাম ধরে ডাকবে ধমক দিবে- মনে হয় সে সচিবের অনেক উপরে।
আসলে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের আমরা পছন্দ করি না কারন এটা আমাদের রক্তের মধ্যে নাই। ইতিহাসে দেখা যায় আমরা কখনও স্বাধীন ছিলাম না ফলে আন্দোলন সংগ্রাম ভাংচুর সমালোচনা অন্যকে অসম্মান করা আমাদের রক্তের মধ্যে আছে। এখান থেকে বের হতে হবে। ফেসবুকে দেখলাম একজন স্বনামধন্য ডাক্তার লিখেছেন ঘুষের টাকা ভাগাভাগীর গোপন নথি রোজিনা দেখেছেন। সরকারী কেনাকাটা মন্ত্রনালয় করে না করে অধিদপ্তর এটাও তারা জানে না। হায়রে সেলুকাস!
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঘটনাকে প্রচারের নিয়ন্ত্রকরা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের স্বার্থ তারা দেখবে এটা স্বাভাবিক। আমি মনে করি সব মন্ত্রণালয় দায়িশীলতা সাথে কর্যক্রম গ্রহন করবে। অবশ্যই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
অভিনন্দন
পাওয়ার যোগ্য এমন একটি সাহসী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য।
সাংবাদিক কেউ অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া উচিত এটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ, আর সাংবাদিকদের উচিত সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে অন্যায় অবিচার ঢুুকে গেছে তা সকলের কাছে তুলে ধরা। সাংবাদিকদের উচিত সৎ ও ভালো অফিসারদের পক্ষে লেখা উৎসাহিত করা এবং অফিসারের উচিত সৎ ও যোগ্য সাংবাদিকদের পেট্রোনাইজ করা সহায়তা করা।
বাংলাদেশ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পর পর ৫ বার। এটা এমনি এমনি?
কারা যে অন্যায় আর অনিয়ম করে না তার লিস্ট দেয়া অসম্ভব ও কঠিন। তবে ব্যাংকিং খাতে হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দেউলিয়া হওয়ার কৌশল পুরানো হলেও এখনও জৌলুসের সাথে ক্ষমতাধররা করে যাচ্ছে। এমন লোকের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার। বাংলাদেশের সকল কর্মকর্তা সকল লোকাল গভমেন্ট প্রতিনিধি করাপশন করলেও একজন ব্যাংক ডিফল্টরের সমান ক্ষতি তারা দেশের করতে পারবে না। কই সাংবাদিক বন্ধুরা তাদের কারোই কেস হিস্ট্রি তুলে ধরলেন না।
আমরা সাংবাদিক বন্ধুদের সাথে আতাত চাই না সখ্যতা চাই আর বাস্তব অবস্থা জানতে চাই। একদিন না একদিন দুদক ঠিক কাজটি করতে পারবে।
লেখক : জয়েন্ট সেক্রেটারি, আইসিটি ডিভিশন।