মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শিক্ষা আমার অধিকার : অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হোক

বৃহস্পতিবার, মে ২০, ২০২১
শিক্ষা আমার অধিকার : অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেয়া হোক

রাসেল আহামেদ : 

কপটাচারির একটা সীমা আছে। আর কতদিন বসে থাকব? আন্দোলন ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এখন স্যাররা সান্তনার বাণী শুনাচ্ছে। এখনও নাকি অফলাইনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সরকার যে সিদ্ধান্ত দিবে সেই সিদ্ধান্তই তারা কার্যকর করবে।

কেনো আমাদের কি জীবন নেই? আমাদের কি ভবিষ্যত নেই? সেশনজটে পড়ে থাকলে আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে? চাকরির ক্ষেত্রে কি বয়স সীমাবদ্ধ করা হবে? বাবা-মায়ের বোঝা হয়ে আর কয়দিন থাকবো?

ক্যাম্পাস খুলে দিলে প্রব্লেম কি? দেশের আম জনতা যদি বাজারঘাট খুলে, ব্যবসা বানিজ্য করতে পারে। তারা যদি বাইরে বের হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। আমরা শিক্ষার কাতারে থেকে কি করোনার সিচুয়েশন বুঝি না? আমরা কি সচেতন থেকে হলে উঠতে পারব না? পরীক্ষা ও ক্লাস সচেতনতার সাথে করতে পারব না? নাকি আমাদের আম জনতার মতো উলটাপালটা যুক্তি দিয়ে দাবিয়ে রাখবে? আমরা কি সচেতনতা বুঝি না?

আমাদের জীবন ও ভবিষ্যতের চিন্তা সরকার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় আদৌ করে নি। বরং মেরুদণ্ডহীন প্রানীর মতো আমাদের দমিয়ে রাখছে। আর কত অপেক্ষা করব? হল, ক্যম্পাস খুলে দিয়ে বিকল্প পদ্ধতি কি করা যায় না? আমরা কি পড়াশোনা কে এগিয়ে নিতে পারি না? আমাদের শিক্ষার কি কোনো মর্যাদা নেই? আমার বাবা-মা যে আমার পিছনে অর্থ ব্যয় করছে তার খেসারত কে দিবে? পরিনত বয়সেও কি বাবা-মার ঘাড়ে বোঝা হয়ে থাকব? দেশে সবকিছুই যদি স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে তাহলে শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানের কি সমস্যা? নাকি রাষ্ট্রকে মেরুদণ্ডহীন করে গড়ে তোলাই সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য?আমাদের কি দাবি দেওয়া থাকতে পারে না?আমাদের কি বাক স্বাধিনতার অধিকার নেই?

আমাদের পরিবারের কথা ভাবতে হয়,নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হয়। বেকারত্ব জীবন আর কতো পোহানো যায়। চাকুরির ক্ষেত্রেও আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি বেজে যায়। দেশে এতো এতো স্টুডেন্ট যদি বসে বসে খায় বা ঘরের কুনো হয়ে থাকে তাহলে দেশের ভবিষ্যৎ কোন পর্যায়ে যেতে পারে- এটা হইত আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক লোকেদের ভাবনার আড়ালে।শিক্ষায় যদি জাতির মেরুদণ্ড হয়। সাহিত্যই যদি জাতির দর্পনতুল্য হয় তাহলে আমাদের শিক্ষা ও সাহিত্য কোনটার চর্চায় বা ঠিকমতো হচ্ছে। একটি দেশকে এগিয়ে নিতে যদি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার ঘটাতে হয়, তাহলে শিক্ষা, প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা ক্ষেত্রগুলো বন্ধ রেখে কোন বিষয়টি আমরা উদঘাটন করতে পারলাম? আমাদের দেশ কোন দিক থেকেই এগিয়ে গেলো? পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো যদি তাদের শিক্ষার খাত ও গবেষণার খাত সমুন্নত রাখতে পারে। আমরা কেন পারব না? নাকি আজও আমাদের মাথায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুক্তিবোধহীন মানুষের মতো কুমন্ত্রণা থেকেই যাবে।

জ্ঞানী গুণীদের মুখেই শুনা যায় এটা বাংলাদেশ বুঝলে? এ দেশে এসব ভাবনা ভেবে হবে না? কোনো লাভ নেই। অন্যান্য দেশ গুলো প্রযুক্তি বিদ্যায় অনেক এগিয়ে। ওরা এই করোনার পেন্ডিমিক সিচুয়েশনকে বস করে নিয়েছে। ওরা ইন্টারনেট সার্ভিস ভালো দিচ্ছে। ওদের কোনো ঘাটতি নেই। ওরা অনেক এগিয়ে আছে। ওদের সাথে আমাদের তুলনা করে লাভ নেই। তাহলে ওরা মানুষ আমরা মানুষ না? ওদের বুদ্ধি, বিবেক আকুল আছে আমাদের নেই? আসলে মিস্টার বিষয়টি ও রকম না।  আমাদের দেশে সুযোগটাই ত দেন না আপনারা।

দেশের মেধাবী স্টুডেন্টদের ঘর বন্দি করে রেখেছেন। নিজেদের স্বার্থকে ঠিকই হাসিল করে নিচ্ছেন। অথচ জাতির প্রজন্ম নিয়ে আপনাদের কোনো ভাবনায় নেই। হাজার,হাজার শিক্ষার্থীর মেধার কি পরিণতি হচ্ছে, তা একটু দেখুন। দেখবেন, নিজের প্রতি ঘৃণা জন্মাবে। নিজেই নিজের বিবেককে প্রশ্ন করে দেখুন। এই অবস্থায় আপনার ছেলে মেয়ে বা দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার কি শিখতে পেরেছে? তাদের জানার পরিধি কতটুকু?

এদের সময় কাটে কম্পিউটার গেমিং এ,সময় কাটে পাব্জি আর ফ্রি ফায়ারে। অনেকেই তো জীবনের গতিই ছেড়ে দিছে। এদের ধ্যান ধারনা শিক্ষা থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যারা নিজেদের জীবন দর্শন নিয়ে ভাবনায় কাতর, চিন্তায় ব্যথিত তাদের নেই কোনো ভবিষ্যতে টিকে থাকার মতো অবস্থা? নেই কোনো সুযোগ সুবিধা?হইত তাদের জীবন বিপন্নতার মুখোমুখি। তখন এই ভেবে যখন তারা সচেতন হয়ে নিজেদের জন্য কিছু করতে চায়, তখন আপনাদের নানান অযুহাত আর সান্তনার বাণী শোনা যায়।

করোনার দেড় বছর হয়ে গেলো। কই স্টুডেন্টদের নিয়ে তো কোনো যৌক্তিক ভাবনা ভাবতে দেখলাম না। এদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তার অবকাশ দেখলাম না? দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ যদি অচল থাকে, তাহলে সেই দেশের আর কি উন্নতি হতে পারে? সেই দেশের প্রজন্ম আর কতদূর এগিয়ে যেতে পারে? একটু ভেবে দেখুন জনাব।

করোনার এই সময়ে সব কিছুই স্বাভাবিকভাবেই চলছে। লকডাউন দেওয়া সত্বেও কয়জন মানুষই বা মেনে চলছে? সবাই যার যার মতো চলাফেরা করছে। সচেতনতা পরিহার করে যাতায়াত করছে। এরা যদি আম হয়ে সব কিছুই করতে পারে। তাহলে কি শিক্ষিত সমাজ সচেতন হতে পারবে না? তারা কি নিজেদের নিয়ে ভাববে না? লকডাউন দেওয়া সত্বেও যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আপনাদের এতো ভাবনা তারাও ত লাগামহীন চলাফেরা করছে। তাদের এই সবে কোনো মানা নেই। নেই কোনো ভয়ের ছাপ। তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে? কেন তাদের মেধার উন্মোচন হবে না? কেনই পরীক্ষা নিয়ে ক্লাস নিয়ে টানাটানি? কেনই বা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অবিরাম আশংকা। তাদের মাথায় এতো ডিপ্রেশন, যার ফলে এদের বেছে নিতে হচ্ছে আত্মহত্যা নামক জঘন্য কাজ। কেনই বা তারা জীবনের গতি ফিরে পারছে না?

এদের নিয়ে কি আমাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই? এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কি আমাদের কোনো স্বপ্ন নেই। অনেকই বলে করোনার এই সময়ে এগুলো মেনে নিতেই হবে। তাহলে বলব, খাবারের জন্য যদি তুমি ছুটতে পারো দূর হতে বহুদূর। তাহলে তোমার মৌলিক অধিকার শিক্ষা কি তাচ্ছিল্য? এর কি কোনো গুরুত্ব নেই? মানুষের বছর বেঁচে থাকার জন্য যেমন অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা  প্রয়োজন। তেমনি শিক্ষাটাও বিশেষ প্রয়োজন। কারণ তোমাকে জাতি মূল্যায়ন করবে শিক্ষা দিয়ে।  খাদ্য বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে নয়।

এইসব বিষয় আমাদের প্রত্যেকরই জানা। আমরা নিজেরাও অনেক ভালো বুঝি। কিন্তু আমাদের কেন জানি কোনো দায়বদ্ধতা কাজ করে না। কেমন যেন ঘুপটি মেরে বসে থাকি কোনঠাসা হয়ে। এর ফলে আমাদেরই পরিনতি খারাপ হচ্ছে। হয়ত এর খেসারত কোনো একসময় জাতিকে দিতে হবে। প্রজন্মের দায়ভার আমাদেরই বহন করতে হবে। বিশ্বের কাছে লাঞ্ছনা,  বঞ্চনা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য আমাদেরই পোহাতে হবে। হয়ত বুঝ হবে আরো অনেক পরে।  কিন্তু তখন যে অনেক দেরি হয়ে যাবে। 

লেখক : 

শিক্ষার্থীঃ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল