মোঃ ফরিদুল ইসলাম, সিকৃবি প্রতিনিধি:
আজ (শনিবার) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) দ্বিতীয় বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অলিম্পিয়াড এর কোয়ালিফাইং পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের অলিম্পিয়াডের সিকৃবি পর্বে ২৬টি দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাঝে বিজয়ী হয়েছে “টিম এম্বুস”। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়ী দলকে নিয়ে পরবর্তীতে অলিম্পিয়াডের মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হবে।
ইউএসএইড এর অর্থায়নে, ন্যাশনাল ভেটেরিনারি ডিন কাউন্সিল এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সহযোগিতায় দেশের ১৪টি ভেটেরিনারি মেডিসিন ডিগ্রি প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অলিম্পিয়াড এর সিকৃবির কোয়ালিফাইং পর্বের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন ভুঁঞা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অলিম্পিয়াডের অনলাইন ও অফলাইন পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অলিম্পিয়াডে ভেটেরিনারি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নে, রোগ নির্ণয় ও পোস্টার তৈরি সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর পরীক্ষা হয়। পরবর্তীতে বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্বে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সিকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্দিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নাম ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অলিম্পিয়াডের সিকৃবি পর্বে বিজয়ী দলের নাম ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন ভুঁঞা।
অনুষ্ঠানে সিকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন ভুঁঞা বলেন, "FAO কে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর একটি প্রতিযোগিতা মূলক আয়োজন করার জন্য। তোমরা যারা জুনিয়র আছো তাদের জন্য এটি একটি অবশ্যই রোমাঞ্চকর অনুভূতি এবং তোমরা অনেক কিছু আজ শিখতে পেরেছো। মেধা চর্চার জন্য এমন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা চেষ্টা করবো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন অনুষ্ঠান আয়োজন করার, যেটা তোমাদের এই প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠানের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে । বিজয়ী হওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা। অংশগ্রহণের ফলে যে অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে এটা পরবর্তীতে তোমাদের একজন স্মার্ট ভেটেরিনারিয়ান হিসেবে তৈরি হতে সহায়তা করবে। আমি মনে করি আজকের ২৭টি দলের মধ্যে যদি সাতাশ জনও ভেটেরিনারি সেক্টরে থাকে তবে এই সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নতি সম্ভব হবে। আমি আশা করবো তোমরা আজকে এখান থেকে যারা বিজয় হয়েছো বা হওনি তারা এখান থেকে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তোমাদের শিক্ষা জীবনে এগিয়ে যাবে।"
এদিকে অলিম্পিয়াডের সিকৃবি পর্বের সভাপতি অধ্যাপক সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, "বৈচিত্র্য ও পাবলিক ডিমান্ডের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ভেটেরিনারি পেশার পরিবর্তন এসেছে। গত দুই দশকে একটি ভেটেরিনারি স্কুলের পরিবর্তে ১৪টি এবং প্রতি বছর গ্রাজুয়েশনের সংখ্যা ৫০ হতে হাজার অধিকে উন্নিত হয়েছে। ফার্মিং প্যাটার্ন, কৌশল, পোল্ট্রি শিল্প, আধুনিক ডেইরি খামার স্থাপনের সংখ্যা বৃদ্ধি, পোশা প্রানির সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নতুন নতুন রোগের আবির্ভাব ঘটে। এ সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, আন্তর্জাতিক মানের গ্রাজুয়েট তৈরী ও ভেটেরিনারি ছাত্রদের জন্য আলাদা প্লাটফর্ম তৈরী ও কারিকুলার উন্নয়নের লক্ষে FAO ও জাতীয় ভেটেরিনারি ডিন কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে এবং এরই ফলশ্রুতিতে ১৪ টি ভেটেরিনারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভেটেরিনারি অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।"
এ বছর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) সহ মোট ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২৭টি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এর মধ্যে সিকৃবি থেকে ২৬ টি দল অংশগ্রহণ করে।
বিজয়ী দল টিম এম্বুসের সদস্যরা হলেন ৫ম বর্ষ থেকে নিশাত তাসনিম, ৪র্থ বর্ষ থেকে প্রমিতুষ দত্ত, ৩য় বর্ষ থেকে খাদিজাতুল কুবরা, ২য় বর্ষ থেকে ইমরান মিয়া ও ১ম বর্ষ থেকে মোঃ রাহাতুল আশিকিন।
সময় জার্নাল/এলআর