আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কাছে জিম্মি দেড় শতাধিক ইসরায়েল ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মুক্তি দিতে হামাসের হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনীতিকদের একটি দল হামাসকে প্রস্তাব করেছে— যদি জিম্মিদের মুক্তি দেয় হামাস, সেক্ষেত্রে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদেরও মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
কূটনীতিকদের অপর একটি দল একই প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
গত শনিবার ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। ওই দিন ভোর থেকে একের পর এক রকেট ছুড়তে থাকে হামাস। প্রায় একই সঙ্গে হ্যাং গ্লাইডার, মোটর চালিত গ্লাইডার, জিপ ও গাড়িতে চেপে ইসরায়েলে প্রবেশ করে প্রায় হাজার খানেক হামাস যোদ্ধা।
ইসরায়েলে প্রবেশের পর বিভিন্ন বেসামরিক ভবন লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ার পাশাপাশি শত শত সাধারণ ইসরায়েলি ও অন্যান্য নাগরিকদের হত্যা করে যোদ্ধারা। তারপর ওই দিনই বেশ কয়েকজন নারী, পুরুষ, শিশু ও বয়স্ক মানুষকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে এই জিম্মিদের সংখ্যা জানা না গেলেও সোমবার জাতিসংঘের ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান জানিয়েছেন, অন্তত ১৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে নিয়ে গেছে হামাস।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনিবার যুদ্ধ বাঁধার দিন থেকেই হামাস ও ইসরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে হামাস। এই আলোচনার মূল উদ্দেশ্যে সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে আনা এবং দুই ভূখণ্ডের জিম্মি ও বন্দি বিনিময় করা।
আলোচনার গতি ও এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল বেশ ইতিবাচক— উল্লেখ করে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি রয়টার্সকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা সব পক্ষের সঙ্গেই সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো সহিংসতার মাত্রা হ্রাস করা, বন্দি ও জিম্মি বিনিময় এবং এই সংঘাতের রেশ যেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তা নিশ্চিত করা।
এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে ইসরায়েল ও হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শনিবার হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ৫ শতাধিক মানুষ। বর্তমানে এই সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৬০০। এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯০০ জন ইসরায়েল ও অন্যান্য দেশের নাগরিক, বাকিরা ফিলিস্তিনি।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শনিবার ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরুর দিনই কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল থানিকে টেলিফোন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সেই ফোনালাপে ব্লিনকেন কাতারের প্রধানমন্ত্রীকে এই সংকটে মধ্যস্থতার ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রধানমন্ত্রীও তাতে দায়িত্বের সঙ্গে সাড়া দেন।
এসজে/আরইউ