নিজস্ব প্রতিনিধি:
শেষ এক সপ্তাহে প্রতি হালি ডিমের দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড়বাজারে কিনলে ডিমের ডজন পড়ছে ১৬০ টাকা, যা পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে ১৬৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাৎ, ভোক্তাদের এখন একটি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৫ টাকা। অথচ সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
সরকারের দাম বেঁধে দেওয়া আরেক পণ্য পেঁয়াজ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি এ পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। এখন দেশি ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
শুরু ডিম-পেঁয়াজ নয়, বাজারে আলুসহ প্রায় সব ধরনের সবজি ও মাছের দামেও অস্থিরতা রয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে অধিকাংশ সবজির দাম আকাশছোঁয়া। পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি ৮০ টাকা কেজির কমে মিলছে না।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্তদের ওপর চাপ আরও বাড়ছে। ফলে বাজারের তালিকায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে তাদের। অধিকাংশ মানুষ অস্বাভাবিক বাজার দরে ক্ষোভ প্রকাশও করছেন।
খিলগাঁও তালতলা বাজারে এনামূল হোসেন নামের একজন ক্রেতা বলেন, সরকার যেসব পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে সেগুলোর দামও বাড়ছে। আর যেগুলোর বেঁধে দেয়নি সেগুলো তো আকাশ ছুঁয়েছে। সরকার কিছুতেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। শুধু গণমাধ্যমে বাজার সিন্ডিকেটের কথা বলে দায় এড়ানো হচ্ছে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বাজারে ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নিধার্রণ করে দেয়। সে হিসাবে গত এক মাসেও এসব পণ্যের বেঁধে দেওয়া দর বাজারে কার্যকর হয়নি। ওই দামে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, ডিমের ডজন ১৪৪ টাকা এবং আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকার মধ্যে বিক্রি হওয়ার কথা। অথচ বাজারে এখন পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ১০০ টাকা, আলু ৫০ টাকা এবং ডিমের ডজন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টির কারণে গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া সবজির দাম এখনো কমেনি। এখন বৃষ্টি না থাকলেও সবজির দাম আরও বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, কৃষকের অনেক সবজি খেতে পচে নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ বিঘ্ন হওয়ায় দাম বাড়তি।
অন্যদিকে দর বাড়তি মাছ-মাংসেরও। কেজিতে ১৫ টাকার মতো বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সীমিত আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনে পাঙাশ, চাষের কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। বাজারে এসব মাছের কেজিও এখন ২২০ থেকে ২৮০ টাকা। এছাড়া রুই, কাতলা, কালিবাউশ ও মৃগেল বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়। যা কয়েক সপ্তাহ আগে তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন মাছ বিক্রেতারা।
সময় জার্নাল/এলআর