ফাহিম হোসেন, ঢাকা প্রতিনিধি:
ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে একদল লেখক, শিল্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিক।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গান, পথনাটক, কবিতা পাঠ, পারফরম্যান্স আর্ট ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবিরা কবিতা আবৃত্তি করছেন। কবিতার মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের সমালোচনা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলছেন তারা। এছাড়া পথনাটকের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের 'উন্নয়ন ধারণাকে' ব্যঙ্গ করা হয়।
একপাশে প্রদর্শন করা হয় চিত্রকর্ম; বিরোধী দলকে নিপীড়ন, হামলা-মামলা, সাইবার সিকিউরিটি এক্ট, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চিত্র সেখানে তুলে ধরা হয়। এছাড়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে 'ফ্রি প্যালেস্টাইন' নামে চিত্রকর্ম প্রদর্শন করা হয়। সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছেন।
সরকারের 'সর্বগ্রাসী' চরিত্র বোঝাতে 'পোট্রেট অব ডিক্টেটর' নামে ভাস্কর্য প্রদর্শন করেন ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) ঢাবি সংসদের সভাপতি শিমুল কুম্ভকার। ভাস্কর্যটির বিশাল মুখ হা করে আছে; মুখের ভেতর টাকার বান্ডেল, পয়সা ও ভোটের বাক্সসহ বিভিন্ন বস্তু দেখা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিমুল কুম্ভকার বলেন, বর্তমান সরকার দেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। তাই প্রতিবাদস্বরূপ আমি তার একটি প্রতিকৃতি বানানোর চেষ্টা করেছি।'
এতে 'ডেভেলপমেন্ট' নামে নাটক প্রদর্শন করেন তীরন্দাজ রেপার্টরি। 'একটি ক্ষুধার্তের গল্প' নামে মাইম অভিনয় করেন শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি। এছাড়াও গান পরিবেশন করেন অরূপ রাহী, ফারজানা ওয়াহিদ শায়ান , সমগীত, সহজিয়া, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকা মহানগর, মূয়ীয মাহফুজ, আনা নাসরিন, রাহাত শান্তনু প্রমুখ। সমকালীন কবিরা এতে কবিতা পাঠ করে শোনান।
সাংস্কৃতিক সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত হন লেখক আলতাফ পারভেজ, চলচ্চিত্রকার মোহাম্মদ কাইয়ুম, সাংবাদিক মামুন হোসাইন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সাংবাদিক সোলায়মান খান, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সবুজ, লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী ফিরোজ আহমেদ, চিত্রশিল্পী সুমন হালদার, লেখক শওকত হোসেন, কথাসাহিত্যিক শামসুজ্জামান হিরা, গবেষক মাহতাবউদ্দিন আহমেদসহ প্রমুখ।
আয়োজনের সাথে জড়িত বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র না থাকায় মত প্রকাশের স্বাধীনতাও নেই। বাংলাদেশে কোন প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনও হচ্ছে না। আমরা একটি কতৃত্ববাদী অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। দেশে অর্থনৈতিক সংকট, টাকা পাচার, লুটপাট, বিভিন্ন ধরনের আইনের মধ্য দিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে, রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর বাইরে লেখক,সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন।’
সময় জার্নাল/এলআর