সময় জার্নাল ডেস্ক:
আগামীকাল শুক্রবার মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে হবে দেবীর বোধন। শেষ মুহূর্তে রঙ-তুলির আঁচড়ে দেবীকে সাজিয়ে তুলতে নিরলস কাজ করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। ব্যস্ততায় তাদের যেন এখন দম ফেলারও ফুরসত নেই।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবে প্রধান অনুষঙ্গ দেবী দুর্গার প্রতিমা। পাশাপাশি তৈরি হয়েছে মহিষাসুরের প্রতিমাও। এই মহিষাসুরকে বধের জন্যই দুর্গতিনাশিনী দেবীর মর্ত্যে আগমন। এছাড়াও শিল্পীরা লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ এবং দুর্গার বাহন সিংহের প্রতিমাও তৈরি করেছেন। তৈরি হয়েছে দেবী লক্ষ্মী, সরস্বতী ও দেবতা কার্তিক, গণেশের বাহন যথাক্রমে পেঁচা, হাঁস, ইঁদুর আর ময়ূর।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, বাংলাবাজার, শ্যামবাজার, পাটুয়াটুলি, প্যারীদাস রোড, মুরগিটোলা, মদনমোহন দাস লেন, গোয়ারনগর, গেন্ডারিয়া, ডালপট্টি এলাকার অলিগলিতে লেগেছে উৎসবের ছোঁয়া। বেড়েছে দর্শনার্থীদের আনাগোনাও।
বিভিন্ন মণ্ডপে দেখা গেছে, রং-তুলির কাজ শেষে শিল্পীরা দেবীকে পরাচ্ছেন শাড়ি, মুকুট ও শাঁখা-সিঁদুর। বৃহস্পতিবার রাত বা শুক্রবার সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে দেবীর প্রতিমা স্থাপন করা হবে। পুরান ঢাকার অলিগলিতে চলছে মন্দিরের প্যান্ডেল তৈরির কাজ। বাঁশ দিয়ে বানানো হচ্ছে প্রতিমা স্থাপনের মঞ্চ। পূজামণ্ডপ ঘিরে জমকালো আলোকসজ্জাও হচ্ছে কোথাও কোথাও।
পূজার একদিন আগেও ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে প্রতিমা শিল্পীদের। শাঁখারী বাজার, বাংলাবাজারে গিয়ে দেখে গেছে, প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। শিল্পীরা মহামায়া দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের গাঁয়ে শেষ আঁচড় দিচ্ছেন। মনের মাধুরী মিশিয়ে রঙের কাজ শেষে প্রতিমাকে সাজানো হচ্ছে কাপড় পরিয়ে।
বাংলাবাজার জমিদার বাড়ির প্রতিমা শিল্পী বলাই পাল বলেন, কাজ শেষেই আমাদের তৃপ্তি। রথযাত্রার পর থেকে দিন-রাত এক করে কাজ করেছি। এ বছর ১২টি কাজের অর্ডার পেয়েছি। সবগুলো কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ কম হচ্ছে। কারিগরদের বেতন মিটিয়ে কাল তাদের ছেড়ে দেবো।
এ বছর শাঁখারী বাজারের এক গলিতে ১১টি মণ্ডপে চলবে পূজা উদযাপন। সেখানে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে। প্যান্ডেল বানানোর কাজ চলছে। পূজা ঘিরে দোকানে দোকানে বেচাকেনাও চলছে সমানতালে। বিশেষত, শাখা-সিঁদুরের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি।
শাঁখারী বাজারের নববাণী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রঞ্জিত নন্দী জাগো নিউজকে বলেন, পূজা উদযাপনের সব প্রস্তুতি শেষ। গত কিছুদিন পূজার চাঁদা কালেকশনে খুবই ব্যস্ততা ছিল। শুক্রবার সকালে মণ্ডপে প্রতিমা স্থাপন হবে। এ বছর মণ্ডপের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় থাকবে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
যথারীতি সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজার পর আগামী মঙ্গলবার দশমী তিথিতে দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব।
সময় জার্নাল/এলআর