আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মারাত্মক হামলার শিকার হওয়া গাজায় অবশেষে ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করেছে। মিশরের সঙ্গে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার একমাত্র সীমান্ত যোগাযোগ পথ রাফাহ ক্রসিং স্থানীয় সময় দশটার দিকে খুলে দেওয়া হয়।
এর আগে কয়েকদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও মিশর বলে আসছিল যে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য রাফাহ ক্রসিং খোলা হবে। তবে দিনক্ষণ প্রকাশিত হলেও সেটি সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় খাবার, পানি ও জরুরি ওষুধের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। সেখানে দ্রুত সহায়তা না পৌঁছালে বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
হামাসের মিডিয়া অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আজকে যে ত্রাণ ত্রাণবাহী কনভয় প্রবেশ করবে তার মধ্যে রয়েছে ২০টি ট্রাক। এগুলো ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সীমিত পরিমাণ খাদ্য বহন করবে।'
সূত্রের বরাত দিয়ে আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মিশরীয় রেড ক্রিসেন্ট এখন এই প্রথম কনভয় ক্রসিং পরিচালনা করছে। তবে গাজায় জাতিসংঘের সহায়তা পৌঁছানোর জন্য সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে শুক্রবার রাফাহ ক্রসিং পরিদর্শন করে দ্রুত গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে গাজায় প্রবেশ করা ২০টি ট্রাকে প্রধানত চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং সামান্য পরিমাণে খাবার থাকবে। তবে পানি ও জ্বালানি এসব ট্রাকে থাকবে না। যদিও এগুলো গাজার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আল জাজিরা জানিয়েছে, রাফাহ সীমান্ত দিয়ে প্রথম ট্রাক প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন যে গত সোমবার ক্রসিং খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। গত কয়েকদিন ধরে ক্রসিংটিতেও ইসরায়েলি বোমা হামলা চালিয়েছে। যার ফলে ক্রসিংটি বন্ধ করে দেয় মিশর।
অবরুদ্ধ গাজায় প্রবেশের মাত্র তিনটি পথ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি পথ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল। আর বাকি একটি হলো মিশরের সঙ্গের রাফাহ ক্রসিং। যেটি গাজা থেকে সরাসরি মিশরের সঙ্গে সংযুক্ত।
গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। শত শত বসত-বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। নিহতের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। ইসরায়েলের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদাম ও নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া মানুষও। এমন অবস্থায় গাজাজুড়ে তীব্র মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। গাজার মানবিক সংকটের বিষয়ে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
ইসরায়েল শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করছে। জাতিসংঘের স্কুল, হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদামেও বোমা ফেলেছে ইসরায়েল। এসব তথ্য জানিয়েছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা, রেডক্রসসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা।
জাতিসংঘ বলছে, পানি সরবরাহ মানবাধিকারের অংশ এবং এটি মৌলিক চাহিদার একটি। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য পানির সরবরাহ প্রয়োজন।
এমআই