ধুলো জমেছে ক্লাস রুমে, থমকে গেছে শিক্ষা। ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ক্লাসের বাহিরে থাকায় চরম হতাশায় নিমজ্জিত শিক্ষার্থীরা। সবশেষ ২৪ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তাও পিছিয়েছে। এমত অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি শিক্ষার্থীদের। কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানাচ্ছেন তারা, হল-ক্যাম্পাস খোলার পর শিক্ষার্থীরা করোনা আক্রান্ত হলে তার দায় কে নিবে? ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা তুলে ধরেছেন সময় জার্নাল প্রতিবেদক মো. মাইদুল ইসলাম।
রিসা হায়দার
সরকারি বি এম কলেজ, বরিশাল।
তিনি বলেন, শিক্ষা যেখানে জাতির মেরুদণ্ড, সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে। এভাবে আমাদের শিক্ষার পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে ঠিক একই ভাবে আমরা দিন দিন চরম হতাশার মধ্যে দিয়ে দিনযাপন করছি। এভাবে চলতে থাকলে দেশের শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হতে আর বেশি সময় লাগবে না। ১৭ তারিখ আমাদের হল খোলার ঘোষণা করেছিলেন সরকার, কিন্তু সেটা করা হয় নি। পরবর্তীতে আবারও ছুটি দীর্ঘ করে ও যেহেতু লকডাউনের সময় বাড়িয়ে ৩০ তারিখ করা হয়েছে, সেহেতু ২৪ মে তে ক্যাম্পাস খোলা হবে না সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। এভাবে ছুটি বাড়তে বাড়তে ১৪ মাসের বেশি সময় হয়ে গেলো। কিন্তু আমরা না হতে পারলাম ভ্যাক্সিনের আওতাভুক্ত না আমাদের ক্যাম্পাস খোলা হলো। তবে সব কিছু যেখানে চলমান সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম কেনো থমকে আছে!!? বয়স বাড়ছে, পারিবারিকভাবে অনেক দায়িত্ব নিজের ওপর অর্পিত হচ্ছে, সরকারি চাকুরীর বয়স কমে যাচ্ছে এভাবে আর চলা ও বেঁচে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আমাদের দাবী “মে মাসের মধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম কে স্বাভাবিক ও সচল করা।”
শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। তাহলে তারা এ পরিস্থিতিতে খোলার দাবি কেন জানাচ্ছেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা অনেক আগেই ঘোষিত হয়েছিলো তবুও তার কার্যক্রম গুলো গুছিয়ে এখনও আনতে সক্ষম হয়নি সরকার। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? দিন যাচ্ছে আমাদের বয়স বাড়ছে। দেশের সকল শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিনের আওতায় আনতে যদি এতোটা সময় নিতে হয় তবে আমরা কোথায় যাবো? হল-ক্যাম্পাস খোলার পর শিক্ষার্থীরা করোনা আক্রান্ত হলে তার দায় কে নিবে?
শাহ্ আলম
আইইআর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে ধরা হয়। অথচ নামমাত্র অনলাইনে ক্লাস পরীক্ষা এগুলোর মাধ্যমে সমাধান খোঁজছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো! কিন্তু আসলেই কি বাংলাদেশে এতটা প্রযুক্তিতে উন্নত হয়েছে? শুধুমাত্র অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে যথার্থ মেধা যাচাই হবে? এটা বিবেকের কাছে প্রশ্ন থেকেই যায়? ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়, সবচেয়ে বেশি বন্ধ থাকছে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আবার সবারই তো বয়স থেমে থাকছে না, অনেক মধ্যবিত্ত দরিদ্র শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে, তাদের একটা স্বপ্ন থাকে গ্র্যাজুয়েশনের সমাপ্তি ঘটিয়ে পরিবারে বাবা-মার মুখে হাসি ফোটাবে। দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মনে চরম হতাশা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা বেঁছে নিচ্ছে আত্মহত্যার মত জঘন্যতম মৃত্যুকে। আমাদের দেশে করোনার চেয়ে আত্মহত্যায় মারা গেছে বেশি মানুষ। তাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা একটি দেশের করোনা ভাইরাসের সমাধান হতে পারে না। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে অতি দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
মারুফা প্রীতি
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ
আমরা শিক্ষার্থীরা কিছুটা হলেও বুঝি নিজেকে কিভাবে সেইফ রাখা যায়। আর তাছাড়া আমরা যে সারাদিন বাড়ি বসে থাকি তা না। আমাদের অন্য কাজের জন্য ও বাহিরে যাওয়া লাগে। এখন প্রশ্ন হতে পারে আপনি সচেতন একজন শিক্ষার্থী হয়ে কিভাবে এই করোনা পরিস্থিতিতে বাহিরে বের হন। তাহলে বলবো শপিংমল, অফিস, আদালত যখন খোলা আছে তখন আমার বের হতে হয়। আমার কাজ আমাকেই করতে হয়।
আর তাছাড়া কয়দিন আগে অনলাইন পরিক্ষা দিয়েছিলাম, সেখানে হার্ডকপি জমা দেয়ার জন্য লোকাল বাসে করে চড়ে কলেজের ৮০০-৯০০ শিক্ষার্থীদের সাথে ঠেলাঠেলি করে এসাইনমেন্ট আর কপি পেপার জমা দিতে হয়েছে। তখন কি আমাকে এনশিওর করা হয়েছে যে আমার করোনা হবেনা? অথবা এসাইনমেন্টর কাগজ যেটা হাতে নিলে করোনা আমাকে স্পর্শ করবেনা? নাকি গণপরিবহনে করোনা থাকেনা কিংবা ৮০০-৯০০ শিক্ষার্থীদের করোনা আক্রমণ করবেনা? কারন এরা হলে আসেনি ক্যাম্পাসে এসেছে তাই তো? তাহলে কি আমরা ধরে নিবো করোনার বসবাস শুধু মাত্র হলে বা ছাত্রাবাস গুলোতে! গণপরিবহন অফিস আদালত গুলোতে নয়।
হল-ক্যাম্পাস খোলার পর শিক্ষার্থীরা করোনা আক্রান্ত হলে তার দায় কে নিবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর করোনা আক্রান্তর দায়ভার যদি কাউকে নিতে হয় তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে নেয়া হোক। শুধু মাত্র ক্যাম্পাস পরিস্থিতিতে দায় ভার নেয়া মানে বোকামি। সব শিক্ষার্থী তো শুধু আর পড়াশোনাই করেনা। কারো কারো পরিবারের দায়িত্ব ও রয়েছে নিজের ওপর। তাকে কাজে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর দায় ভার কতোটুকু নেয়া হয়?
আমরা সরকারের ভ্যাক্সিন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক।কেননা আমরা করোনায় না মরলেও পারিপার্শ্বিক বিরুপ অবস্থাতে মরে যাবো। আমরা যে বয়সে আছি সে বয়সে পরিবারের কাছে দিনের পর দিন পড়ে থাকা, বোঝা ছাড়া আর কিছু না। এই যে কত কত শিক্ষার্থী এই করোনা পরিস্থিতিতে আত্মহত্যা করেছে দেখেছেন তো, এর দায় কে নিবে? আত্মহত্যার কারণ গুলো নিশ্চয় কারো অজানা নয়। হয়তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা হল খোলা থাকলে তারা আজ বেঁচে থাকতো, নিজেকে ব্যস্ত রাখার কিছু উপায় পেতো, নিজেকে শেয়ার করার কিছু অপশন পেতো।
সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের আর মারবেন না, আমরা করোনায় না মরি মানসিক ভারসাম্যহীনতায় মরে যাবো। সাধারন শিক্ষার্থীদের সাথে সরকার অবশ্যই আছেন এবং দাবি কার্যকর করবেন।
মোঃ ইব্রাহীম চৌধুরী মুন্না
লোকপ্রশাসন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সচেতন এবং হল ক্যাম্পাসে তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান এবং ক্যাম্পাসে একই শ্রেণির মানুষদের সাথে চলাফেরা করার কারণে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা সবচেয়ে কম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে এবং আক্রান্তের ব্যাপারে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আমরা চাই অতিদ্রুত নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধীনে শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করা এবং যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না তখনও কওমী মাদ্রাসার স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম কেনো চলতে পারবে না। তাছাড়া, বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে না এর সাথে লড়াই করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমগুলো চালিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
মোঃ বেলাল হোসেন
কৃষি অনুষদ, হাবিপ্রবি
তার মতে, একজন গার্মেন্টসকর্মী যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে পারে, তাহলে কি আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষা দিতে পারবো না? আমরা কি তাদের চেয়ে কম সচেতন?
দেশের সকল ক্ষেত্রে লোকজন স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারছে, শুধু আমরাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারবো না, এটা ছাত্র সমাজের জন্য লজ্জা জনক কথা।
মনে হচ্ছে আমরাই দেশের সবচেয়ে অসচেতন নাগরিক!
তিনি আরও বলেন, করোনা আরো ২-৪ বছরে নিষ্পত্তি হবে কিনা, তার কোনো গ্যারান্টি নেই! তাহলে করোনা আরো কত বছর পর নিষ্পত্তি হবে সেই আশায় আমরা কি আরো ২-৪ বছর এভাবে অনিশ্চয়তায় নষ্ট করব? করোনা কে সাথে নিয়েই আমাদের চলতে হবে এখন।
আমরা ক্লাসে না ফিরতে পারি, অন্তত পরীক্ষা গুলো তো নিতে হবে। ১৪ মাস নষ্ট হয়ে গেছে, আরো কত মাস এভাবে নষ্ট করবো আমরা। আমরা কি পরিমাণ হতাশায় ভুগছি সেটা শুধুমাত্র আমরা এবং মনোবিজ্ঞানী ছাড়া অন্য কারো পক্ষে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। ৩০ বছর বয়স হলে আমার সার্টিফিকিটের এক পয়সারও দাম থাকবে না; আমার রাষ্ট্রের কাছে।
আমার পুরো পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ যখন বলে, আর কত বছর লাগবে পড়া শেষ হতে, ঐ মুহুর্তটা নিজেকে কতটা অসহায় লাগে বুঝানো সম্ভব না।
ফাইনাল ইয়ার এর স্টুডেন্টরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষা দিলো, তাদের মধ্যে কয় জনের করোনা হয়েছে? এক জনও আক্রান্ত হয় নি। তাহলে অন্যান্য বর্ষের স্টুডেন্টরা পরীক্ষা দিতে পারবেনা কেনো!?
ভার্সিটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। প্রতিটা ভার্সিটি নিজ নিজ প্রেক্ষাপট পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবে। আমরা ২- ২.৫ বছরের জটে ইতোমধ্যে পড়ে আছি। ঢাবি তো আড়াই বছরের জটে পরে নেই। ঢাকায় মেস খরচ অনেক ব্যয় বহুল, অনেকের জন্যই অসম্ভব। তাই হল না খুলে ঢাবি তে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব ছিলো না। কিন্তু আমাদের ভার্সিটি তে তো মেসে থেকে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব, অনেক ভার্সিটিতেই সম্ভব। এবং পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছিলো। সকল ভার্সিটির অবস্থা যেখানে সমান নয়, এবং প্রতিটি ভার্সিটি স্বায়ত্তশাসিত, সেখানে ঢালাও ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত সকল ভার্সিটির ওপর শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত জানি না। তাই ভার্সিটি গুলোকে নিজের মতো চলতে দিন।
ভার্সিটির শিক্ষক কর্মকর্তারা চলমান সময়ের সব চেয়ে বড় বুদ্ধিজীবী। তারা কম বুঝেন না।
তারা মনে করেছিলেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ডিপার্টমেন্ট ওয়াইজ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব, তার মানে সেটা সম্ভব ছিলো। ভার্সিটির সিদ্ধান্তে মন্ত্রণালয় থেকে হস্তক্ষেপ করা হলো।
সব শেষে একটাই দাবি, ক্লাস শুরু করা না গেলেও অন্তত আমাদের পরীক্ষা নেওয়া হোক। স্কুলের বাচ্চারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে পারবে না। কিন্তু আমাদের তো সমস্যা হবে না।
মিল কারখানার শ্রমিকরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করতে পারলে আমরাও পারবো।
জান্নাতুল সাবিরা
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, রাজশাহী নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১ বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে অনলাইন শিক্ষা বেছে নিয়েছে। যার বিরূপ প্রভাব ফেলেছে শিক্ষর্থীদের জীবনে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নামমাত্র অনলাইন ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব নিয়ে সনদ বিতরণ করছে যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে। অনেকে বলে আগে জীবন, পরে শিক্ষা। তাদের কাছে প্রশ্ন শিক্ষা অর্জন শেষ করে যদি বের হতে না পারি তবে আমার জীবন ও পরিবারের দ্বায়িত্ব কে নিবে? তাই সরকারের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা। কতজন শিক্ষার্থী দেড় বছর ধরে ঘরে বসে রয়েছে? ৯০ শতাংশ বের হয়।তাদের কত শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে? আর আক্রান্ত হলেও সুস্থ আছে কেন? ভাইরাল ইনফেকশন এভাবেই ইমিউনিটি সিস্টেম বাড়িয়ে কাজ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) অনেক আগেই অবগত করেছে যে করোনা ভাইরাস কবে নির্মূল হবে তার ঠিক নেই। তাই আমাদের এটা জীবনে বয়ে নিয়েই চলতে হবে। ঠিক যেভাবে জনসাধারণ চলছে। আর শিক্ষার্থীরা সচেতন। তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানার মত সক্ষমতা রয়েছে। তবুও আক্রান্ত হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষকে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এবং অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে হবে।
তারিকুল ইসলাম হাওলাদার
সরকারি এম এম সিটি কলেজ খুলনা।
"শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড শিকড় বিহীন গাছ যেমন মূল্যহীন, তেমনি শিক্ষা ছাড়া একটি জাতি মূল্যহীন" আমরা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-ক্যাম্পাস খোলার দাবি জানাচ্ছি কারণ আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা দিনে-দিনে পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। প্রায় ৬০% শিক্ষার্থীর ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা। তরুণ প্রজন্মের হাতে আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যত। আর এই তরুণ প্রজন্মই যদি লেখাপড়া ভালোভাবে শিখতে না পারে তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত অন্ধকার ছাড়া কিছুই না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে দিনে দিনে তরুণ সমাজ বিভিন্ন খারাপ কাজে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, এর দায় কে নিবে? বাংলাদেশ মেধাশূন্য হয়ে গেলে এর দায় কে নিবে?
আরো একটি বড় সমস্যা হল বেকারত্ব। শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়লে তুমুল আকারে বেকারত্ব বাড়বে, এর দায় কে নিবে? মেধাবীরা অকালে ঝড়ে পড়বে, এর দায় কে নিবে? আর অনলাইনে নাম মাত্র ক্লাস নেওয়া হয়। আর আমরাতো বলিনি স্বাস্থ্যবিধি মানব না। তাহলে একের পর এক তারিখ দিয়েও কেন আমাদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-ক্যাম্পাস খোলা হচ্ছে না?
অন্যান্য রাষ্ট্রের দিকে একবার তাকিয়ে দেখুন তারা কিন্তু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চীনে করোনার সংক্রমণ হার এত বেশি তারপরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় সচল রেখেছে।
সময় জার্নাল/এমআই